পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় না বাংলাদেশ সরকার। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দরে দেশটির সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ একথা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অত সহজে ছিন্ন করা যায় না। কাজেই বাংলাদেশ বাংলাদেশের মতো আছে, অন্যদিকে পাকিস্তান পাকিস্তানের মতো আছে। আজকে অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সবদিক থেকে পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে বলেও মনে করেন বাংলাদেশ সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী।
কলকাতার ই.এম.বাইপাস লাগোয়া মিলনমেলা প্রাঙ্গণে ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট-২০১৬’ এ যোগ দিতে এদিন সন্ধ্যায় কলকাতায় পৌঁছন বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠানের গেস্ট অফ অনার হিসেবে যোগ দেবেন তিনি। সম্মেলনে যোগ দিতে মন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে একটি ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলও গেছে। কলকাতায় দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন শেষের পর আগামী ১০ জানুয়ারি অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে ‘দ্য পার্টনারশিপ সামিট-২০১৬’ এ যোগ দেবেন তোফায়েল আহমেদ।
পশ্চিমবঙ্গের প্রশংসা করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ভারত আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ আরও বেশি ঘনিষ্ট। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস আমি ব্যক্তিগতভাবে এখানে ছিলাম। আমি এখান থেকে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলাম এবং আমরা বিজয়ী হয়েছি। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে আমরা খুব কৃতজ্ঞ। আজকে বাংলাদেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তেমনি পশ্চিমবঙ্গও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার তরফ থেকে আমি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির জন্য শুভেচ্ছার বার্তা বয়ে নিয়ে এসেছি। তাঁর উদ্যোগে সে বিজনেস সামিট হচ্ছে সেখানে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করবে। আমার সাথে বাংলাদেশের এবিসিসিআই, এমসিসিআই, ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স, বিজিএমইএসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এসেছেন’।
অন্য এক প্রশ্নে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেমন এখানে বিনিয়োগ করতে চাই ঠিক তেমনিভাবে আমরা চাইবো এখানকার ব্যবসায়ীরাও যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে এবং সে লক্ষ্যেই উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করবো। কারণ বিনিয়োগটা আমাদের মূল উদ্যেশ্য। আমাদের দুই দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা এক সাথে মিলিত হবেন। তারা এখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন। এই মত বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা উভয় দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে সার্থকতা লাভ করবে’।
বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু করার বিষয়ে তিনি বলেন, 'ব্যাঙ্কিং খাতে সমস্যাগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি। উভয় দেশ বসে আমরা এই সমস্যা সমাধান করবো, যাতে ব্যবসা বানিজ্য বাধাগ্রস্থ না হয়।'
এদিন কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু। উপস্থিত ছিলেন কলকাতাস্থত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার জকি আহাদ, ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) মোফাকখারুল ইকবাল। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের মন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ছিল সাওতালি ও বাউল নৃত্য-সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ জানুয়ারি, ২০১৫/মাহবুব