ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকীর প্রতি রূঢ় আচরণ করে ব্রিটিশ মিডিয়ার তোপের মুখে পড়েছেন হাউস অব কমন্সের নারী ডেপুটি স্পিকার এলিনর লাইং। খবর বাংলানিউজের।
শুক্রবার হাউস অব কমন্সে ইউনিভার্সেল ক্রেডিট ওয়েলফেয়ার রিফর্ম নিয়ে বিতর্ক চলাকালে সন্তান সম্ভবা ক্ষুধার্ত টিউলিপ কিছু খাওয়ার জন্যে বেড়িয়ে গেলে স্পিকারের দায়িত্ব পালনরত ডেপুটি স্পিকার এলিনর লাইং রুঢ় ভাষায় সমালোচনা করেন টিউলিপের।
খাওয়ার উদ্দেশে বের হয়ে যাওয়ার পর টিউলিপকে তিরষ্কার করে স্পিকার বলেন, কোনো সদস্য বক্তব্য রাখার পর অন্তত পরবর্তী দুই বক্তার বক্তব্য পর্যন্ত তাকে অধিবেশনে থাকতে হয়, এটি হাউসের নিয়ম। কিন্তু একজন সদস্য এটি মানেননি। কিছুক্ষণ পর টিউলিপ পুনরায় হাউসে ঢুকলে তাকে তিরষ্কার করতে গিয়ে স্পিকার বলেন, অন্তঃস্বত্ত্বা হওয়ার ছুতো ব্যবহার করে আপনি সব নারীকে ছোট করেছেন। এ সময় টিউলিপ কিছু বলতে চাইলে রূঢ় ভাষায় স্পিকার বলেন 'আমাকে অন্তঃস্বত্ত্বা হওয়ার অজুহাত দেখাবেন না’।
৭ মাসের সন্তানসম্ভবা টিউলিপের প্রতি স্পিকারের এমন রূঢ় আচরণে হাউসে উপস্থিত অনেক এমপিই এ সময় বিরক্ত হন। একজন নারী স্পিকারের এধরনের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। কোনো কোনো এমপি বিষয়টি নিয়ে স্পিকারের কাছে অভিযোগ জানানোর পরামর্শও দেন টিউলিপকে। টিউলিপ অবশ্য কোনো অভিযোগ না জানিয়ে উল্টো সৌজন্য বজায় রেখে খেতে যাওয়ার জন্য বিনয়ের সঙ্গে এলিনরের কাছে ক্ষমা চান।
এদিকে, একজন সন্তান সম্ভবা এমপি'র প্রতি ডেপুটি স্পিকারের এমন আচরণে তীব্র সমালোচনামূখর হয়েছে ব্রিটিশ মূলধারার সংবাদ মাধ্যমগুলো। কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যম টিউলিপ অন্তঃস্বত্ত্বা বিষয়টি উল্লেখ না করেও এ বিষয় টেনে এনে স্পিকার কর্তৃক সমালোচিত হওয়ায় স্পিকারের কড়া সমালোচনা করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও সোচ্চার স্পিকারের এমন আচরণে।
টিউলিপ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আমার প্রেগনেন্সির বিষয় আমি উল্লেখই করিনি স্পিকারের কাছে, শুধু বলেছি আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম। তিনি বলেন, 'হাউস অব কমন্সের এমন নিয়ম আধুনিক সমাজে যে বেমানান এটিই বুঝলাম আজ। অনেক জরুরি মুহূর্ত আছে, যখন অনুমতি নেওয়ার সুযোগ থাকে না। এমন জরুরি ব্যাপারগুলো বুঝতে কমনসেন্সই যথেষ্ট।'
ডেপুটি স্পিকার এলিনর লাইং কনজারভেটিভ পার্টি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে হাউস অব কমন্সের ডেপুটি স্পিকার মনোনীত হন।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৯ জানুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা