দুর্নীতির মামলায় ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মসিউর রহমানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদও বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় বুধবার যশোরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এ আদেশ দেন।
দুদকের যশোর শাখার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সাবেক এমপি মসিউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত সর্বোচ্চ শাস্তির রায় দিয়েছেন।
এদিকে, এ ঘটনায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ জেলা শহরে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে জেলা বিএনপি। যশোর প্রেসক্লাবে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই হরতালের ডাক দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার দু'টি ধারায় মসিউরকে কারাদণ্ড ও তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। এর মধ্যে ২৬(২) ধারায় তথ্য গোপনের অভিযোগে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে ২৭(১) ধারায় ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, মসিউর রহমানের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন মৃধা মামলা করেন। এতে প্রায় ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। ২০০৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলাটি তদন্ত শেষে মো. মসিউর রহমানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন। ২০০৯ সালের শেষের দিকে ঝিনাইদহ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত মামলাটি আমলে নেন। আমলযোগ্য মামলাটির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রোসিডিং কোয়াসমেন্টের জন্য আবেদন করেন মসিউর রহমান। এরপর ২০১০ সালের ৬ জুন উচ্চ আদালত মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত করেন। চার বছর পর ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল উচ্চ আদালত আসামির মকদ্দমা খারিজ করে স্থগিতাদেশ বাতিল করেন। একই সঙ্গে স্পেশাল জজ আদালত যশোরকে মামলার কার্যক্রম আইন অনুযায়ী পরিচালনার নির্দেশ দেন। এর পর আসামিপক্ষের বিভিন্ন সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়। অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিল করেন আসামি মসিউর রহমান।
পরে লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে গেলে তিনি পুনরায় সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ আবেদন করেন। এ আবেদন খারিজ হলে বিচারকাজ শুরু হয়। এরপর যশোর স্পেশাল জজ আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার রায় ঘোষণা করা হল।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ অক্টোবর, ২০১৭/মাহবুব