২০ জুন, ২০২১ ১৪:৫৩

করোনায় শনাক্ত হলেই দেশীয়দের শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতি করতে চায় চীনা কর্মীরা

অনলাইন ডেস্ক

করোনায় শনাক্ত হলেই দেশীয়দের শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতি করতে চায় চীনা কর্মীরা

দেশের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কর্মরত দেশীয়দের শ্রমিকদের করোনাভাইরাস শনাক্ত হলেই তাদের চাকরিচ্যুতি বা কাজ থেকে বের করে দিতে চায় চীনা কোম্পানি সিএমসির কর্মীরা।

বিসিএমসিএল'র সিদ্ধান্তনুযায়ি, চাকরিচ্যুত না করে কোয়ারেন্টাইন শেষে শ্রমিকদের পুনরায় কাজে যোগ দেওয়ার বিষয়েও ঘোর আপত্তি জানিয়েছে চীনা কর্মীরা।

জানা গেছে, খনি ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সরকারি সংস্থা বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি (বিসিএমসিএল) জানিয়েছে, ,কোনো কর্মী করোনায় আক্রান্ত হলে কোয়ারেন্টাইনশেষে কাজে যোগ দিতে পারবে।'

বিসিএমসিএল আরও সূত্র জানায়, খনিতে সব মিলিয়ে কাজ করে ১ হাজার ১০০ জন শ্রমিক। গত বছরের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ প্রথম শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েক জন করোনায় আক্রান্ত হয়। ব্যাহত হয় কয়লা উত্তোলন। এমন প্রেক্ষাপটে ৫০০-র বেশি শ্রমিককে খনি এলাকায় সার্বক্ষণিক রেখে খননকাজ এগিয়ে নেওয়া হয়।

চীনা প্রকৌশলী ও শ্রমিক রয়েছেন শতাধিক। খনি সংশ্লিষ্ট সব বাংলাদেশি ও চীনা নাগরিককে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। গত ২৬ মে একজন চীনা কর্মী করোনা পজিটিভ হওয়ার পর সংক্রমণের উত্স নিয়ে সংশ্লিষ্টরা চিন্তিত হয়ে পড়েন।

এদিকে, চীনাদের দাবি, খনি এলাকার বাইরে শুধু বাংলাদেশি শ্রমিকদেরই যাতায়াত রয়েছে। তাই কোনো শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে খনি থেকে বের করে দেওয়া হবে এবং সে আর কাজে যোগ দিতে পারবে না। 

তবে চীনাদের দাবিকে অমানবিক এবং অপেশাদার জানিয়ে তা পালন করা হবে না বলে জানানো হয়েছে।

গত ২৭ মে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক সভায় বিসিএমসিএলর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান জানান, বর্তমানে ৫৩৩ জন স্থানীয় শ্রমিক খনিতে কর্মরত রয়েছেন। দৈনিক প্রায় ৫ হাজার টন কয়লা উত্পাদিত হচ্ছে। খনিতে কর্মরত ১২২ চীনা নাগরিকের মধ্যে একজন ২৬ মে করোনা পজিটিভ হয়েছেন। তার সংস্পর্শে আসা বাকি ১২১ চীনাদেরও পরে খনিতে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি। কোয়ারেন্টাইনশেষে তারা কাজে যোগ দেবে। 

এমন প্রেক্ষাপটে চীনারা সবাইকে কোভিড টেস্ট করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। স্থানীয় শ্রমিক কেউ পজিটিভ পাওয়া গেলে তাকে বের করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু বিসিএমসিএল বলেছে, যেহেতু সবাই ডাবল ভ্যাকসিনেটেড। তাই তাদের কোভিড টেস্ট একবার হবে এবং পজিটিভ পাওয়া গেলে কোয়ারেন্টাইন করে পুনরায় কাজে যোগ দেবে। 

কিন্তু চীনাদের আপত্তিতে সভার সভাপতি জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান কয়লা উত্পাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার স্বার্থে চীনাদের সঙ্গে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।

অন্যদিকে, কোম্পানির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেন সরকার বলেন, 'বড়পুকুরিয়ায় কর্মরত শ্রমিকরা অত্যন্ত দক্ষ। তাদের কাজ থেকে বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। চীনাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও নেতাদের সহায়তায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক সমাধান করেছেন।' তবে খনিতে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনো সুরাহা হয়নি।

 

বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর