১১ আগস্ট, ২০২২ ১৯:৪৩
বিশ্ব যুব দিবসে বিশেষজ্ঞদের অভিমত

যুবদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসডিজি ২০৩০ অর্জন সম্ভব

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুবদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসডিজি ২০৩০ অর্জন সম্ভব

যে কোনো দেশের প্রাণশক্তি হলো তরুণ সমাজ। আজকের কিশোর, তরুণ ও যুবরাই আগামীর পরিবার, সমাজ ও দেশের চালিকাশক্তি। বর্তমানে দেশে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী সাড়ে চার কোটির বেশি তরুণ ও যুব জনগোষ্ঠি রয়েছে। এই জনগোষ্ঠিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে এসডিজি ও জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জন সম্ভব। অথচ দেশের বিশাল যুবসমাজের মধ্যে মাত্র সাত শতাংশ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে সরাসরি সেবা গ্রহণ করে। আর প্রতি ৩৫০ জনের জন্য একজন করে সেবা প্রদানকারী রয়েছে। অর্থাৎ বিশাল এই যুবসমাজের ৯৩ শতাংশ জনগোষ্ঠি যথাযথ প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার ও সেবা সম্পর্কে না জানার ফলে অনেক্ষেত্রেই অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণসহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। এই ঝুঁকি এড়াতে সার্বিক সচেতনতা, সম্পৃক্তকরণ এবং স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রয়োজন বলে অভিমত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জাতি গঠনের কোনো বিকল্প নেই বলে অভিমত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বেসরকারি এনজিও লাইট হাউসের আয়োজনে ও ইউএসএআইডি সুখী জীবন প্রকল্প, পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় মিডিয়া অ্যাডভোকেসি সভায় এসব অভিমত গণ্যমাধ্যমে তুলে ধরা হয়।

লাইট হাউসের নির্বাহী প্রধান হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের সদস্য সচিব ফারুক আহমেদ তালুকদারসহ লাইট হাউজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়া সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, দেশের প্রাণশক্তি হলো তরুণ সমাজ। এদেরকে যথাযথ গাইডলাইনের মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে। সরকারসহ বেসরকারিভাবে অনেক সংগঠন এ ব্যাপারে কাজ করছে ঠিকই কিন্তু এর পরিধি আরও বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম কর্মীদেরও অনেক ভূমিকা রয়েছে। 

তিনি বলেন, দেশের বিশাল এই যুবসমাজকে রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতিসহ সব বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে প্রযুক্তির জ্ঞান বেশি বেশি করে অর্জন করতে হবে তাদের। অন্যথায় উন্নয়নের চাকা থেমে পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ।   

সভায় জানানো হয়, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জন করতে হলে সব বয়সী মানুষের সক্ষমতার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সবার অধিকার, বিশেষত প্রজনন অধিকার, নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সামাজিক রীতিনীতি ও বিশ্বাস অনেক ক্ষেত্রেই তরুণ প্রজন্মের প্রজনন অধিকার ও স্বাস্থ্যসেবা বাধাগ্রস্ত করে। এ থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন আন্তঃপ্রজন্মের সংহতি ও সহযোগিতা। এমতাবস্থায় আজ ১২ আগস্ট বিশ্ব যুব দিবস পালিত হবে। 

জাতিসংঘ কর্তৃক বিশ্ব যুব দিবস-২০২২ এর নির্ধারিত প্রতিপাদ্য‘ আন্তঃপ্রজন্ম সংহতি: সকল বয়সীদের জন্য ভালোবাসার পৃথিবী গড়ি’। প্রতি বছরের এই দিনটিতে আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালিত হয়ে থাকে। ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালনের প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়েছিল। দিনটি প্রথম পালিত হয় ২০০০ সালে। দিবসটি উপলক্ষে আজ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সভা-সেমিনার ও র্যালির আয়োজন করা হয়।
 
পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল বাস্তবায়িত ইউএসএআইডি সুখী জীবন প্রকল্প ২০১৮ সালে একটি জরিপ পরিচালনা করে যা ২০১৯ সালে ফ্যাসিলিটি এসেসমেন্ট রিপোর্ট (২০১৯) নামে প্রকাশিত হয়। এই জরিপ অনুসারে দেশের প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা খাতের মাত্র ১০ শতাংশ সেবাপ্রদানকারী তরুণ ও যুবদের প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য প্রশিক্ষিত অথচ দেশের তরুণ ও যুব জনসংখ্যা সাড়ে চার কোটির বেশি। 

সভায় জানানো হয়, স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করার সঙ্গে সঙ্গে সবাই যদি নিজের ও পরিবারের জন্য সঠিক তথ্য জেনে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং আকাঙ্ক্ষিত গুণগতমানসম্পন্ন ও সমতাভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা স্বাস্থ্য কেন্দ্রসমূহে পাওয়া যায় তবেই নিশ্চিত করা সম্ভব হবে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জাতি। এতেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। পরিকল্পিত পরিবার গঠনের পাশাপাশি, নিরাপদ ও সুষ্ঠু প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা সকলের জন্য নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর