এমএসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য রফতানির বাধা দূর করতে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
রবিবার আগারগাঁও পর্যটন ভবনের শৈলপ্রপাত মিলনায়তনে আয়োজিত ‘এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য রফতানি সহজ করা এবং বিশ্ব বাজারে যুক্ত করতে সহায়তার উপায়’ গোলটেবিল আলোচনায় এমন আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
গোল টেবিল আলোচনায় উদ্যোক্তারা জানান, পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ক্রেতার পক্ষ থেকে পাওনা পরিশোধ, স্যাম্পল পাঠানো, অনলাইন লেনদেনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাস্টমস, বাংলাদেশ ব্যাংক, পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে নানা ধরনের হয়রানি শিকার হন তারা। ফলে রফতানি পণ্যের ন্যায্য দাম, ক্রেতাকে সময়মতো পণ্য পাঠাতে আস্থার সংকটের পাশাপাশি নিজেদের ব্যবসায়ও লোকসানের মুখে পড়তে হয় তাদের।
উদ্যোক্তাদের এসব সমস্যা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সমাধানের নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমান। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব (সংযুক্ত) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার এবং উইমেন এন্ট্রাপ্রেনিওর অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি নাসরীন ফাতেমা আউয়াল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজিম হাসান সাত্তার।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ৩০ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, দেশের প্রায় এক কোটি ১৮ লাখ শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৯ শতাংশের বেশি কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই)। শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে কর্মরত। এই খাতে প্রায় তিন কোটিরও বেশি মানুষ কর্মরত রয়েছেন। অধিক জনসংখ্যা এবং সীমিত সম্পদের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২ এসএমই নীতিমালা-২০১৯ এবং এসডিজি-২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী রয়েছেন প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা। যাদের ৬০ শতাংশই নারী।
বিডি প্রতিদিন/কেএ