আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটগ্রহণের জন্য ৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
‘দেশের বাইরে ভোটদান সিস্টেম উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন’ শিরোনামে চলতি অর্থবছরে এই প্রকল্প গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত সেপ্টেম্বর কমিশন এই প্রকল্পের জন্য তহবিল চেয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২ অক্টোবর মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে অর্থ বরাদ্দের চিঠি পাঠায়।
কর্মকর্তারা জানান, সেপ্টেম্বরের শুরুতে তহবিল চাওয়া হলেও, মাসের শেষ দিকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) ভোটাধিকার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর মন্ত্রণালয় এই অনুমোদন দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম ধাপে প্রবাসী ভোট কার্যক্রম চালু হবে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাজ্যে। ভোটাররা আগেই অনলাইনে নিবন্ধন করবেন, এরপর নির্ধারিত দিনে পাসপোর্ট ও এনআইডি যাচাই করে ভোট দিতে পারবেন।
কমিশনের তথ্যমতে, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ কোটি এনআইডি ইস্যু করা হয়েছে। তবে কতজন প্রবাসী কার্ডধারী তা সঠিকভাবে জানা নেই। বর্তমানে একমাত্র পদ্ধতি—পোস্টাল ব্যালট ভোটিং কার্যকর হয়নি। কারণ সময়ের সীমাবদ্ধতার কারণে এই পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ প্রায় অসম্ভব।
কমিশন দুটি প্রযুক্তিভিত্তিক পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে— প্রথমত তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা সূচক পোস্টাল ভোটিং, দ্বিতীয়ত অনলাইন ইন্টারনেট ভোটিং। তবে এর পাশাপাশি প্রক্সি ভোটিংকেও আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গত ১৪ অক্টোবর নির্বাচন ভবনে সচিব আখতার আহমেদ জানান, এখন পর্যন্ত ১১টি দেশে এনআইডি সেবা চালু হয়েছে। নির্বাচনের আগে আরও আটটি দেশে সেবা সম্প্রসারণের প্রস্তুতি চলছে। প্রবাসীদের জন্য একটি নিবন্ধন অ্যাপও তৈরি করা হয়েছে, যা অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চালু হবে। এছাড়া, ওমান, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালদ্বীপ ও জর্ডানে কারিগরি দল পাঠানো হবে। বাহরাইন, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স ও স্পেনেও উদ্যোগের অনুমতি পাওয়া গেছে।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, প্রবাসীদের ভোটগ্রহণে প্রধান দুটি চ্যালেঞ্জ— ব্যালটের গোপনীয়তা রক্ষা করা ও সময়মতো ভোট ফেরত আসা নিশ্চিত করা।
পোস্টাল ব্যালটের বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, প্রায় ২৪% ব্যালট দেশে পৌঁছায় না, যা প্রধান সমস্যার এক। এছাড়া, নির্বাচনী আসনের প্রার্থী তালিকা শেষ মুহূর্তে পরিবর্তিত হলে বিদেশ থেকে প্রাপ্ত ভোট গণনার বাইরে চলে যেতে পারে।
সানাউল্লাহ উল্লেখ করেন, প্রবাসীদের জন্য ভোট গ্রহণের ব্যয় প্রতি ভোটার ৭০০ টাকা, তবে প্রবাসীদের কোনো ফি দিতে হবে না।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের জন্য ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল