গত ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউ'র টরন্টো ফিল্ম ফোরাম- এর কার্যালয়ে এক স্মরণ সভায় শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মুক্তিযোদ্ধা, চলচ্চিত্র সম্পাদক ও নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুলকে স্মরণ করা হয়।
গত ১৮ ডিসেম্বর ৬৮ বছর বয়সে ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাইদুল আনাম টুটুল।
বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর পরই যারা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গুণগত মান উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখেন টুটুল তাদেরই একজন। ঢাকায় জন্ম নেয়া টুটুল কৈশোর থেকেই মঞ্চ ও টেলিভিশন এ অভিনয়ের মাধ্যমে তার শিল্পী জীবন শুরু করেন।
ঢাকা থিয়েটারের প্রযোজনায় তার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে, সংবাদ কার্টুন ও মুন্তাসীর ফ্যান্টাসী। মোস্তফা মনোয়ারের পরিচালনায় ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রযোজনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'রক্ত করবী' নাটকে তিনি কিশোরের চরিত্রে অভিনয় করে সুধী সমাজের প্রশংসা অর্জন করেন।
১৯৭৪ সালে বৃত্তি নিয়ে চলচ্চিত্র বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে তিনি ভারতের পুনেতে অবস্থিত ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ায় শিক্ষা গ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবন শেষে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম শুদ্ধ চলচ্চিত্র 'সূর্য দীঘল বাড়ী'র সম্পাদনা করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে শেখ নিয়ামত আলী ও মসিউদ্দীন শাকের পরিচালিত এই চলচ্চিত্রটি সেই বছর জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয় এবং সাইদুল আনাম টুটুল সম্পাদনা বিভাগে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন।
এছাড়াও তার সম্পাদিত চলচ্চিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ঘুড্ডি, দহন, দুখাই, দীপু নম্বর টু ও আধিয়ার।
২০০৩ সালে বাংলার তেভাগা আন্দোলনের পটভূমিতে তিনি তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র "আধিয়ার" নির্মাণ করেন। জীবনের শেষ বেলায় তিনি তার পরিচালিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র "কালবেলা"র কাজ করছিলেন।
সাইদুল আনাম টুটুলের স্মরণ সভায় তার জীবন ও কর্ম নিয়ে কথা বলেন তার ঘনিষ্ঠজন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সভাপতি এনায়েত করিম বাবুল, টরন্টো ফিল্ম ফোরামের উপদেষ্টা, চলচ্চিত্র বোদ্ধা ও লেখক ইকবাল করিম হাসনু।
এছাড়াও সাইদুল আনাম টুটুলের শিল্পী জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন সাধারণ সম্পাদক মনিস রফিক, অর্থ সম্পাদক সাইদুল আলম টুকু, ফিল্ম স্ক্রিনিং সম্পাদক রেজিনা রহমান, কার্যকরী সদস্য শেখ শাহনওয়াজ, সোলাইমান তালুত রবিন প্রমুখ।
স্মরণ সভায় সাইদুল আনাম টুটুল পরিচালিত "আধিয়ার" চলচ্চিত্রের উল্লেখযোগ্য দৃশ্য দেখানো হয়।
বিডি প্রতিদিন/কালাম