২৪ এপ্রিল, ২০১৯ ১৫:২৪

পাকিস্তানি হায়েনাদের বিচার দাবিতে জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্মারকলিপি

১৯ বীরাঙ্গনার স্বাক্ষর

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক

পাকিস্তানি হায়েনাদের বিচার দাবিতে জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্মারকলিপি

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় দু’লক্ষাধিক নারীর সম্ভ্রম কেড়ে নেয়ার জন্যে দায়ী পাকিস্তানি সৈন্যদের বিচারের দাবিতে জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এতে যুদ্ধে বাঙালিদের নির্বিচারে হত্যা, নির্যাতন, সহায়-সম্পদে অগ্নিসংযোগ করার জন্যে পাকিস্তানকে প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ এবং ক্ষমা প্রার্থনারও আহ্বান জানানো হয়।

১৯ বীরাঙ্গনার স্বাক্ষর সম্বলিত এই স্মারকলিপি ২২ এপ্রিল জাতিসংঘ সদর দফতরে হস্তান্তর করেন মুক্তিযোদ্ধা দম্পতি আমিনা বেগম মিনা এবং আজিজুল হক বকুল।

স্মারকলিপিতে বীরাঙ্গনাদের সুন্দরভাবে দিনাতিপাতের জন্যে প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের আবেদনও করা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে, দেশমাতৃকার মুক্তির জন্যে নিজের সর্বস্ব খুইয়েছেন যে নারীরা তারা খেয়ে, না খেয়ে সমাজে অপাঙক্তেয় হিসেবে বসবাস করছেন। অথচ তারাও বীর মুক্তিযোদ্ধা। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেই পাকিস্তানী হায়েনাদের বিচার করতে হবে। তাহলেই বীরাঙ্গনারা শান্তি পাবেন।

স্মারকলিপির কপি দেয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাকেও। স্মারকলিপিতে স্বাক্ষরকারি বীরাঙ্গনারা হলেন আছিয়া বেগম, খোদেজা বেগম, কমলা বেওয়া, আয়মনা বেগম, আয়েশা বেগম, করিমন বেগম, জয়গুন বেগম, নূরজাহান বেগম, বানু খাতুন, রাহেলা বেওয়া, সামিনা খাতুন, সুরাইয়া খাতুন, হামিদা খাতুন, হাসিনা বেগম, মাহেলা বেগম, হাজেরা খাতুন, রহিমা বেওয়া প্রমুখ।

স্মারকলিপি প্রদানের পরই আমিনা বেগম মিনা এবং আজিজুল হক বকুল জ্যাকসন হাইটসে যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের কর্মকর্তাগণের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় মুক্তিযোদ্ধা আমিনা বেগম মিনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে  সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা। প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য হলেও মাসিক ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছি। বছরে কয়েকটি বোনাসও দেয়া হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের। বীরঙ্গনাদেরকেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। 

মুক্তিযোদ্ধা মিনা অবশ্য দুঃখের সাথে উল্লেখ করেন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের কোটা বাতিল করা হয়েছে। এটি মেনে নিতে পারছি না। আশা করছি, বঙ্গবন্ধুর কন্যা এটি পুনর্বিবেচনা করবেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, নির্বাহী সদস্য মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার এবং মুক্তিযোদ্ধা সানাউল্লাহ।

মুক্তিযোদ্ধা মিনার ধারণা, জাতিসংঘ এক সময় বাধ্য হবে পাক হায়েনাদের বিচার করতে। সে পর্যন্ত আমরা সোচ্চার থাকবো।

সিরাজগঞ্জের এই মুক্তিযোদ্ধা মিনা কর্তৃক বাংলাদেশের ১০০ বীরাঙ্গনা নারী মুক্তিযোদ্ধার পরিচিতি সম্বলিত ‘মুক্তিযুদ্ধের কালো অধ্যায়/ঠিকানা ৭১' গ্রন্থটি প্রদান করেন যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামকে। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর