শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশি মুনিরার মুখ

সাইফ ইমন

ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনে  বাংলাদেশি মুনিরার মুখ

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, আন্দোলনে মুনিরার মুখ হয়ে উঠেছে জনপ্রিয়

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে লাখ লাখ নারীর প্রতিবাদ আন্দোলনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক মুনিরার ছবি দেখা যায় সবার হাতে হাতে। সেই থেকে বিশ্ব মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত এই বাংলাদেশি নারী

 

৩২ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক মুনিরা আহমেদ হঠাৎ করেই বিশ্ব মিডিয়ায় এখন আলোচিত নাম। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের প্রতীকী প্রতিবাদী মুখে পরিণত হয়েছেন তিনি। তার মুখচ্ছবি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা দাঁড়িয়েছেন রাজপথে। স্লোগানে উত্তাল আন্দোলনে মুনিরার মুখ যেন ‘প্রতিবাদের প্রতীক’। মুনিরা থাকেন নিউইয়র্ক শহরের কুইন্সে। পেশায় একজন ফ্রিল্যান্সার। তিনি নিজেও ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নেমেছেন। এ বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক গণবিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে লাখ লাখ নারীর সে প্রতিবাদ আন্দোলনে মুনিরার ছবি দেখা যায় সবার হাতে হাতে। রীতিমতো আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনে মুনিরার মুখচ্ছবি প্ল্যাকার্ড আকারে হাতে তুলে রাজপথে দাঁড়িয়েছেন লাখো বিক্ষোভকারী। মিডিয়ার চোখ স্বভাবতই তার ওপর পড়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে এসেছে তার কথা। বলেছেন কীভাবে তার ছবি প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছে। বলেছেন বিক্ষোভে তার সম্পৃক্ততার কথাও। মুনিরার ভাষ্য, আমি একজন মার্কিনি এবং মুসলিম। এ দুটি বিষয় নিয়ে আমি খুবই গর্বিত। বিক্ষোভকারীদের ব্যবহূত মুনিরার আলোচিত সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন পতাকার ডিজাইনে মাথায় হিজাব পরেছেন মুনিরা। তার চোখ-মুখে ফুটে উঠে এক তেজস্বিনী নারী প্রতীক। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শহর তার মুখচ্ছবি ব্যবহার করা পোস্টারে ঢেকে যায়। দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক ‘দি নিউইয়র্ক টাইমস’ ও ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’সহ আরও অনেক সংবাদপত্রের পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে ছাপা হয় মুনিরার এই ছবি। মুনিরা আহমেদ আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ছবিটি যে বিষয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে তা সম্মানের বিষয়। এতে বিরোধী কিছু নেই। তিনি আরও বলেন, ছবিটি বলছে— ‘আপনার মতো আমিও একজন আমেরিকান’। ছবিটি কিন্তু এখনকার তোলা নয়। এটি প্রায় ১০ বছর আগে তুলেন   মুনিরার বন্ধু রিদওয়ান আদহামি। ওয়াশিংটন থেকে নিউইয়র্কে ফেরার পর মুনিরা আহমেদ ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আপনার মতো আমিও একজন মার্কিনি।  সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিখ্যাত পোর্টেট ফটোগ্রাফার শিপার্ড ফেয়রি মুনিরার হিজাব পরা ওই ছবির পোর্টেট এর কাজ করেন। বর্তমানে ‘উই দ্য পিপল’ শিরোনামে অ্যামপ্লিফায়ার ফাউন্ডেশনের একটি প্রকল্পের হয়ে কাজ করছেন শিপার্ড ফেয়রি।

এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অভিষেকের আগে একই ধরনের পোর্টেট ছবি তুলে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন এই ফেয়রি। ওবামার সেই ছবির সঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গ এক বালক ও ল্যাটিনো এক তরুণীর ছবি জুড়ে দিয়ে শিরোনাম করেছিলেন ‘উইমেন আর পারফেক্ট’।

তবে এবারের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুনিরা আহমেদের ছবি নারী আন্দোলনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এই ছবিই হয়ে উঠেছে ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক।

মুনিরার ছবিটি একটি মুসলিম ব্লগে পোস্ট করার পর তা ভাইরাল হয়ে পড়ে। ছড়িয়ে যায় সর্বত্র। ব্লগে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই লিখেন, ‘অনেক মুসলিম দেশে যুক্তরাষ্ট্র যখন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তখন একজন মার্কিনি ও একজন মুসলিম হওয়ার জন্য ছবিটি কী বুঝায়?’

 

মুনিরার জন্ম জ্যামাইকাতে। পরিবারের সঙ্গে বর্তমানে মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বসবাস করেন বাংলাদেশি মুনিরা।

সর্বশেষ খবর