সিলেটে বিপিএলের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি রংপুর রাইডার্স-খুলনা টাইগার্স। দিনের প্রথম ম্যাচে খেলেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স ও চিটাগং কিংস। সে ম্যাচে দর্শকের কমতি ছিল না। কানায় কানায় পূর্ণ ছিল গ্যালারি। বিপিএলে সিলেট পর্বের শেষ ম্যাচেও গ্যালারি পূর্ণ ছিল দর্শকে। দিনের ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্স হেরে যাওয়ায় অনেক দর্শকই হতাশ হয়েছে। তবে তারা নিজের শহরে আরও একটা ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় রইল। এবারের বিপিএলে ব্যাটে-বলে দুরন্ত পারফর্ম করে ভক্তের সংখ্যা অনেক বাড়িয়েছেন নুরুল হাসান সোহানরা। সিলেটের দর্শকও মুগ্ধতা নিয়ে দলটির খেলা উপভোগ করেছে। রংপুর রাইডার্স আরও একটি রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিল দর্শককে। শেষ ওভারের নাটকীয়তায় খুলনা টাইগার্সকে ৮ রানে হারিয়েছে সোহান বাহিনী। টানা সাত জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করা রংপুর রাইডার্স।
গতকাল খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে দুটি পরিবর্তন এনে একাদশ সাজায় রংপুর রাইডার্স। অ্যালেক্স হেলসের স্থানে আসেন স্টিভেন টেইলর। কামরুল ইসলাম রাব্বির স্থানে রেজাউর রহমান রাজা। ওপেনিংয়ে রেজাউর রহমান রাজা নেমে শুরুতে সম্ভাবনা জাগালেও মাত্র ১৩ রান করে আবু হায়দারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ১টি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে দর্শককে কিছু সময়ের জন্য বিনোদন দেন তিনি। সাইফ হাসানও বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি (৭ রান)। হাসান মাহমুদ বোল্ড করেন সাইফকে। চলমান বিপিএলে এটা ছিল হাসানের দ্বিতীয় উইকেট। ওপেনার তৌফিক খান তুষার করেন ৩০ বলে ৩৬ রান। ৪টি চার ও ১টি ছক্কার মার ছিল তাঁর ইনিংসে। আবু হায়দারের বলে লং অফে নওয়াজকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তৌফিক। ১৪ ওভারে ১০৪ রান করে রংপুর রাইডার্স। দলটির চরিত্রের সঙ্গে এত অল্প রান ঠিক মানাচ্ছিল না। তবে পরের ওভারেই সব বদলে দিলেন খুশদিল শাহ। টানা ৪ ছক্কায় রানরেট বাড়িয়ে নেন। ১৫তম ওভারে রংপুরের সংগ্রহ ২৬ রান। খুশদিল শাহ ২২ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন ২টি চার ও ৫টি ছক্কার মারে। এর মধ্যে নাসুম আহমেদের ১ ওভারে টানা ৪ বলে ছক্কা হাঁকান তিনি। ১৬ নম্বর ওভারে রংপুরের সংগ্রহ ১৬ রান। সমানতালে ব্যাট চালিয়ে যান ইফতিখারও। এ জুটি রংপুর রাইডার্সকে মাত্র ৫১ বলেই উপহার দেন ১০১ রান। পরের ৬ বলে এ জুটি আরও ১৪ রান যোগ করেন। ইফতিখার ৩৬ বলে ৪৩ রান করে হাসান মাহমুদের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন। ১ বল বাকি থাকতে উইকেটে আসেন নুরুল হাসান সোহান। তিনি ১টি রান নিয়ে রানআউটের শিকার হন। রংপুর রাইডার্স ৪ উইকেটে ১৮৬ রান সংগ্রহ করে। শুরুর দিকে ধীরগতির রান দেখে অনেকেই লো স্কোরিং ম্যাচ আশা করেছিল। তবে খুশদিল সত্যিই ‘দিল খুশ’ করে দিয়েছেন সিলেটবাসীর। তিনি শেষ পর্যন্ত ৩৫ বলে ৭৩ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ইনিংসে ৪টি চারের পাশাপাশি ৬টি ছক্কার মার ছিল।
জবাব দিতে নেমে খুলনা টাইগার্স ভালোভাবেই লক্ষ্যের দিকে ছুটছিল। মোহাম্মদ নাইম ৫৮, মিরাজ ৩৯ এবং আফিফ ২৯ রান করে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে শেষ ওভারে দারুণ বোলিং করে রংপুরকে জয় উপহার দেন সাইফুদ্দিন। খুলনা ১৭৮ রানে ইনিংস শেষ করে। রংপুরের পক্ষে আফিফ ৩টি, শেখ মেহেদী এবং সাইফুদ্দিন ২টি করে উইকেট শিকার করেন। সিলেট থেকে টানা চার জয় নিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছে রংপুর রাইডার্স। চট্টগ্রাম পর্বে দুটি ম্যাচ খেলবে দলটি। ১৭ জানুয়ারি খেলবে চিটাগং কিংসের বিপক্ষে। ২৩ জানুয়ারি মুখোমুখি হবে দুর্বার রাজশাহীর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রংপর রাইডার্স : ১৮৬/৫, ২০ ওভার (তাওফিক ৩৬, টেইলর ১৩, ইফতেখার ৪৩, খুশদিল ৭৩; আবু হায়দার ৪-০-৩৭-২, হাসান মাহমুদ ৪-০-৩৮-২)।
খুলনা টাইগার্স : ১৭৮/৯, ২০ ওভার (নাইম ৫৮, মিরাজ ৩৯, আফিফ ২৯। মেহেদী ৪-০-২৭-২, সাইফুদ্দিন ৩-০-২৮-২, আকিফ ৪-০-২৯-৩, রাজা ২-০-২৪-০, নাহিদ ৩-০-৩৭-০, খুশদিল ২-০-১৮-০, ইফতেখার ২-০-১৪-০)
ফল : রংপুর রাইডার্স ৮ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : আকিফ