২৫ মার্চ শিলংয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যাচে মূল ফোকাস হামজা চৌধুরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে নিজেকে চেনানো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ খেলোয়াড়ের বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হচ্ছে ভারতের বিপক্ষে। বাংলাদেশের গ্রুপে অন্য দুটি দেশ হচ্ছে হংকং ও সিঙ্গাপুর। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে বাংলাদেশের ছয় ম্যাচে হামজা সবকটি খেলবেন কি না নিশ্চিত নয়। তবে ২৫ মার্চ খেলবেন। ১৮ বা ১৯ মার্চ তাঁর ঢাকা আসার কথা। এরপর জাতীয় দলের সঙ্গে হামজা ভারত যাবেন। যেদিন বাংলাদেশে খেলার ব্যাপারে চূড়ান্ত ছাড়পত্র পেলেন সেদিন থেকেই হামজাকে ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে।
জাতীয় দলের লড়াইয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ সুবিধা করতে পারছে না। ২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর আর জয়ের দেখা নেই। অধিকাংশ ম্যাচে হার আর কয়েকটি ম্যাচে ড্র। ভারতের কাছে হারার পেছনে বড় কারণই ছিল সুনীল ছেত্রী। ২০০০ সালের শুরু দিকে ছেত্রীর আগমন। তাঁর পারফরম্যান্স আহামরি ছিল না বলে কর্মকর্তাদের মন কাড়তে পারেননি। তুচ্ছতাচ্ছিল্যের মধ্যে আটকে ছিলেন। পরে পরিশ্রম করে ছেত্রী এমন পর্যায়ে চলে যান, যেখানে শুধু ভারত নয়, দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফুটবলার বনে যান। তিনিই হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের বড় আতঙ্ক। ভারতের জয়ের পেছনে অধিকাংশ গোলই তাঁর। আবার যে ম্যাচে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত, সেখানে ছেত্রীর গোলে ভারত হার এড়িয়ে ছিল।
ভারতের এ বিখ্যাত ফুটবলার গত বছর জুনে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান। অথচ সেই অবসর ভেঙে আবার আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছেন। তা-ও আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২৫ মার্চ শিলংয়ে তিনি এশিয়ান বাছাই পর্বে খেলবেন। ভারতীয় ফুটবল কর্মকর্তাদের অনুরোধে সুনীল ছেত্রী অবসর ভেঙেছেন। কারণ হামজা যেন ম্যাচে এককভাবে প্রাধান্য বিস্তার করতে না পারেন। বাংলাদেশ যেমন ম্যাচটির জন্য জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেখানে ভারতও বসে নেই। শিলংয়ে তারা মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে খেলবে। প্রশ্ন হচ্ছে, ছেত্রী ফিরছেন এতে কি বাংলাদেশ আতঙ্কিত? সত্যি বলতে কি, হামজার সঙ্গে ছেত্রীর তুলনা করলে হাস্যকর হবে। ছেত্রী মূলত সাফ ফুটবল খেলেই তারকা খ্যাতি পেয়েছেন। হামজা ইংলিশ ফুটবলে এফএ কাপ জয় করেছেন। কমিউনিটি শিল্ড জিতেছেন। লেস্টার সিটির বড় তারকা; যা ছেত্রীর কাছে স্বপ্ন বলা যায়। হামজা ও ছেত্রী কখনো এক হতে পারেন না।
২০১৯ সালে কলকাতা সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে সাদ উদ্দিনের গোলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায়। ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়। সেই সাদ উদ্দিন হামজার ফেরা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা তাঁকে স্বাগত জানাই। ছেত্রী খেললে ম্যাচ উপভোগ্য হবে। ছেত্রী উঁচুমানের খেলোয়াড়। তবে তিনি তো হামজার সমকক্ষ নন। হামজার জন্য আমরা অনুপ্রাণিত। কোনো আতঙ্ক কাজ করছে না। তবে হামজার সঙ্গে মানিয়ে খেলতে হবে। গতি বুঝতে হবে। আশা করি শিলংয়ে নতুন এক বাংলাদেশের দেখা মিলবে।’