হৃদরোগ হচ্ছে আধুনিক সময়ের সবচেয়ে বেশি ঘাতক। ভালোভাবে অধ্যয়ন করলে এটা জানা যাবে যে, এই রোগের মুখ্য কারণ হচ্ছে হৃদয়ের ধমনীগুলোয় জমে থাকা ফ্যাটের অর্থাৎ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডসের লাগাতার স্থায়ী রূপে জমা হওয়া আমরা যে তেল, ঘি বা অন্য ফ্যাট দিয়ে তৈরি খাবার খাই, সেগুলোকে আমাদের শরীর পূর্ণ রূপে প্রয়োগ করতে পারে না। অনুপযুক্ত এবং অতিরিক্ত ফ্যাট, অন্য তত্ত্বগুলোর সহায়তায়, যেমন আধুনিক জীবনের চাপ, ধূমপানের অভ্যাস এবং এ রকমই আরও অনেক কারণে শরীর আর হৃদয়ের ধমনীগুলোয় জমা হতে শুরু করে, যার ফলে হৃদরোগের উৎপত্তি হয়ে পড়ে। ভালো খবর হচ্ছে, আমরা নিজেদের জীবনশৈলীতে ছোটখাটো সঠিক পরিবর্তন নিয়ে এলে শুধু যে বেড়ে চলা হৃদরোগকে আটকাতে পারব তাই নয়, তার সঙ্গে সঙ্গে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনাকেও কমাতে পারব।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে হলিস্টিক চিকিৎসার গ্রহণযোগ্যতা বেড়েই চলছে। এই চিকিৎসায় রোগী নিজেই কিন্তু নিজের চিকিৎসক, আমরা নিমিত্ত মাত্র। আমরা কেবল সঠিক নিয়মটা দেখিয়ে দিয়ে থাকি, রোগীকে তার সুস্থ হওয়ার পথের সন্ধান দিয়ে থাকি। এসব অর্জনের কাজটি কিন্তু অত সহজ নয়। এর জন্য নিয়মিত সময় দিতে হয়, চর্চা করতে হয় সঠিক নিয়ম মেনে। যোগব্যায়াম, প্রাণায়াম এবং মেডিটেশন ও নিউরোবিক্স- প্রত্যেকটিরই নিজস্ব রীতিনীতি আছে এবং এগুলো করতে হয় সংঘবদ্ধভাবে । তাই এই সংঘবদ্ধের নাম দিয়েছি হলিস্টিক হার্ট ক্লাব। হলিস্টিক হার্ট ক্লাবে যেসব পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়- ডায়েট ম্যানেজমেন্ট * স্ট্রেস ফ্রি টেকনিক * মেডিটেশন * যোগব্যায়াম * প্রাণায়াম * নিউরোবিক * আকুপ্রেসার। এই চিকিৎসায় যারা উপকৃত হবেন- যার এক বা একাধিকবার হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেছে * যিনি এনজিওপাস্টি বা বাইপাস সার্জারির জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছেন, বিশেষত, হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা বেশি কমে গেলে, বেশি বয়স, মাল্টিপল ব্লকেজ, কিডনির কার্যকরী ক্ষমতা কমে গেলে, হেপাটাইটিস বি-পজিটিভ হলে, পায়ের আর্টারিতে অত্যধিক ব্লকেজ থাকলে, কিডনি আর্টারিতে ব্লকেজ থাকলে এবং বাইপাস করতে ভয় পান।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ।