শেষ পর্যন্ত লোডডিক ক্রুইফ আসছেন। বঙ্গবন্ধু কাপে তার প্রশিক্ষণেই বাংলাদেশ ফুটবল দল মাঠে নামবে। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন একজন জার্মানি কোচের কথা বললেও এখন ক্রুইফকে আপদকালীন দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। অথচ আচরণগত কারণে ক্রুইফকে বরখাস্ত করার পর সালাউদ্দিন ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছিলেন, ওর সঙ্গে আমাদের সব সম্পর্ক শেষ। নতুন করে বিদেশি কোচের সন্ধান করতে হবে। না, ভালো মানের কোচ না পাওয়াতে বঙ্গবন্ধু কাপে কয়েক দিনের জন্য ক্রুইফই প্রশিক্ষণ দেবেন। সালাউদ্দিনের কথা, ভালো কোচ অবশ্যই পাওয়া যাবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কাপে আমরা ক্রুইফকে বেটার মনে করছি। কেননা ও বাংলাদেশের ফুটবলারদের কার কেমন পারফরম্যান্স তার জানা হয়ে গেছে। ও থাকলে ভালো কিছু আশা করা যায়। এর পরও বঙ্গবন্ধু কাপে ক্রুইফ কোচ হবেন কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছিল না। কারণ বরখাস্ত করা কোচকে ফিরিয়ে আনতে সভাপতিই সমালোচিত হচ্ছিলেন। ভেতরে ভেতরে অন্য কোচকেও খুঁজছিলেন। সাড়া না পাওয়াতে ক্রুইফকেই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।
কথা হচ্ছে, ক্রুইফই বা ফিরে আসছেন কেন? তাকে তো কম অপমান করে তাড়ানো হয়নি। আসলে সালাউদ্দিন না বলার পর ডাচ এ কোচ চাকরির জন্য অন্য জায়গায় যোগাযোগ করছিলেন। ঢাকার একটি ক্লাবের সঙ্গেও তার কথা চলছিল। কিন্তু পারিশ্রমিকে বনাবুনি না হওয়াতে ব্যাপারটি বেশি দূর এগোয়নি। ক্রুইফের চিন্তা ছিল সার্কভুক্ত কোনো দেশ তাকে অফার দেবে। কেউ সাড়া না দেওয়াতে নিরুপায় হয়ে বাংলাদেশের দায়িত্ব নিচ্ছেন। বাফুফে সহসভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেন, বঙ্গবন্ধু কাপে ক্রুইফ যে কোচ হচ্ছেন এটা চূড়ান্ত। তাই ঢাকায় আনার জন্য তাকে টিকিট পাঠানো হচ্ছে। এমনকি বকেয়া বেতনের বড় একটা অংশ বঙ্গবন্ধু কাপের আগেই পরিশোধ করা যেতে পারে। ডাচ কোচ চলে যাওয়ার পর সাইফুল বারী টিটু জাতীয় দলের দায়িত্ব পালন করেন। তার প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ বেশকটি প্রীতি ম্যাচে অংশ নিয়েছে। তাই কথা উঠেছে ক্রুইফ আবার দায়িত্ব নেওয়াতে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে কোনো সমস্যা হবে কিনা। সত্যি বলতে কি, ক্রুইফ যে আসছেন এতে অনেক ফুটবলারই খুশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আক্রমণ ভাগের এক খেলোয়াড় বলেন, টিটু ভাই নিঃসন্দেহে বড় মানের কোচ। তার কাছে অনেক কিছু শেখার আছে। কিন্তু এটাও ঠিক যে, ক্রুইফ কোচ হওয়ার পর দলে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে দম ও গতি দুটোই বেড়েছে। বল কীভাবে আদান-প্রদান করা যায় তা ভালোভাবে শিক্ষা নিয়েছেন ফুটবলাররা। তিনি বলেন, বাফুফে যে কোনো কারণে হোক ডাচ কোচকে বহিষ্কার করে। কিন্তু ক্রুইফ যদি আরও বেশি দিন থাকতেন তাহলে বাংলাদেশের ফুটবলই লাভবান হতো। আর এ সুযোগটা কাজে লাগাতে পারে বাফুফে। বঙ্গবন্ধু কাপের জন্য তাকে আনা হচ্ছে ঠিকই। এমনো হতে পারে, ফুটবলারদের স্বার্থের কথা বলে ক্রুইফের সঙ্গে নতুন চুক্তি হতে পারে। সামনে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ছাড়াও বাংলাদেশ আরও কটি প্রীতি ম্যাচে অংশ নিতে পারে। এর মধ্যে হয়তো বা বাফুফে নতুন কোনো বিদেশি কোচ খুঁজবে। না পেলে ক্রুইফ আপদকালীন নয়, হতে পারেন পূর্ণাঙ্গ কোচ। শুধু তাই নয়, ক্রুইফের সহকারী হিসেবে রেখে কোস্টারকেও দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।