প্রথমটির পর দ্বিতীয় ম্যাচেও হারল বাংলাদেশ। এবারের হারের ব্যবধান আরেকটু বড়। ব্রিসবেনে গা গরমের প্রথম ম্যাচে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে হেরেছিল ৫ উইকেটে। দ্বিতীয়টি হেরেছে ৬ উইকেটে। ব্রিসবেনে দুই সপ্তাহের কন্ডিশনিং ক্যাম্প শেষ হবে কাল। কন্ডিশনিং ক্যাম্প চলাকালীন প্রস্তুতি হিসেবে দুই দুটি ম্যাচ খেলে টাইগাররা। ক্যাম্প শেষে মাশরাফি বাহিনী এখন প্রস্তুতি নিবে বিশ্বকাপের মূল মিশনে। ১৮ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ক্রিকেট মহাযজ্ঞে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নামার আগে সিডনির ব্ল্যাকটাউন অলিম্পিক পার্ক ওভালে আরও দুটি প্রস্তুতি অফিসিয়াল ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ৯ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান এবং ১২ ফেব্রুয়ারি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে গত ২৪ জানুয়ারি ঢাকা ছাড়েন মাশরাফিরা। নিজস্ব খরচে ব্রিসবেনে দুই সপ্তাহের ক্যাম্প করছে। ক্যাম্প করে কতটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন সাকিব, মুমিনুলরা, সেটা বুঝা গেছে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে। অপরিচিত ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একাদশের সঙ্গে পেরে উঠেনি কোনোভাবে। প্রথম ম্যাচে মুমিনুল হকের ৫২ রানে ভর করে ২৩১ রান করেছিল। কাল ব্যাটসম্যানদের অবস্থা ছিল আরও যাচ্ছেতাই। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ভ্যান ডার গুটেন ও টার্নারের দুরন্ত বোলিংয়ে ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় চলে আসে মাশরাফিবিহীন বাংলাদেশ। প্রথম অনুশীলন ম্যাচে বোলিং করার সময় সামান্য ব্যথা পেয়েছিলেন মাশরাফি। কাল তাকে খেলায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। তার জায়গায় নেতৃত্ব দেন সাকিব আল হাসান। নেতৃত্ব দিলেও ব্যর্থ ছিলেন সাকিব। ৫ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সাজঘরে ফিরেন মাত্র ২ রান করে। ব্যর্থ হয়েছেন আরেক অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক করেছেন মাত্র ৮ রান। ৫৭ রানে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর জুটি বাধেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাব্বির রহমান। দুজনে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৬৪ রান। দুজনেই আগের ম্যাচেও রান করেছিলেন। কাল সাব্বির করলেন ৩৩ এবং মাহমুদুল্লাহ করেন ৩৬ রান। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে যান আট নম্বরে ব্যাট করতে নামা নাসির হোসেন। ৫৬ বলে ৭ চারে ৫২ রানের ইনিংস খেললে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৪৩.১ ওভারে ১৯৩ রান। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার টার্নার ৩০ রানে নেন ৪ উইকেট। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে বেশ অনেকদিন ধরেই ভুগছিলেন মাইকেল ক্লার্ক। বিশ্বকাপে খেলার জন্য মুখিয়ে থাকা অসি অধিনায়ক কাল খেলেন প্রস্তুতি ম্যাচে। ব্যাটিং করেন ওপেন। বোলিং করেন দুই ওভার এবং স্লিপে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিংও করেন। ১৯৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দুই স্বাগতিক ওপেনার ৬৯ রানের ভিত দেন। পিয়েরসন ২৯ এবং ক্লার্ক ৩৪ রান করেন ৩৬ বলে ৬ চারে। ১৩ জনের ম্যাচে ক্লার্ককে সাজঘরে ফেরান সৌম্য সরকার। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে মামুলী টার্গেট ডিঙাতে পথ দেখান অধিনায়ক অ্যালান টার্নার ৭১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে। বল হাতেও সফল ছিলেন টার্নার। টাইগারদের পক্ষে আল আমিন, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা একটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ১৯৩/১০, ৪৩.১ ওভার ( সৌম্য সরকার ১৫, এনামুল হক বিজয় ২, মুমিনুল হক ১৩, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৩৬, সাকিব আল হাসান ২, মুশফিকুর রহিম ৮, সাব্বির রহমান রুম্মন ৩৩, নাসির হোসেন ৫২, আরাফাত সানি ১৪, রুবেল হোসেন ১, অতি. ১৭। ভ্যান ডার গুটেন ২/২৬, গ্রেগরী ১/৯, টার্নার ৪/৩০, কনওয়ে ২/২৩)।
অস্ট্রেলিয়া একাদশ : ১৯৪/৪, ৪১.৫ ওভার ( পিয়েরসন ২৯, মাইকেল ক্লার্ক ৩৪, বসিস্টো ২১, টার্নার ৭১*, উইলিস ৫, ম্যাকডার্মট ১৮*। আল আমিন ১/৪৬, রুবেল হোসেন ০/২৭, সৌম্য সরকার ১/২৩, সাব্বির রহমান ১/২১, মাহমুদুল্লাহ ১/১৪, আরাফাত স্মিথ ০/২১, তাইজুল ০/১৯, নাসির ০/৬, মুমিনুল ০/৯)।