জাভেদ ওমর গুল্লু বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ওপেনার। ক্যারিয়ারে ধীরলয়ে ক্রিকেট খেলার অভিযোগ রয়েছে তার বিপক্ষে। কিন্তু ওয়ানডে স্ট্রাইক ও গড় বাংলাদেশের অন্য যে কোনো স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানের চেয়ে ভালো। ৫৯টি ওয়ানডে খেলা গুল্লু বিশ্বকাপ খেলেছেন মাত্র একটি। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে সুপার এইট খেলা টাইগারদের সদস্য হয়ে তিন ম্যাচে রান করেছিলেন ৫৫। ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৩১২ রান করা ৩৮ বছর বয়স্ক গুল্লু খেলা ছেড়েছেন অনেক আগে। সাবেক এই ওপেনার বাংলাদেশ প্রতিদিনের পাঠকদের জন্য বিশ্বকাপগামী টাইগারদের ওপেনারদের শক্তিশালী ও দুর্বল দিকগুলোর টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ করেছেন। আজ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে বলেছেন।
হাটা চলা ফেরা একটু ধীর গতির। যা একজন ক্রিকেটারের সঙ্গে মানায় না। অথচ মহমুদুল্লাহ রিয়াদ তেমনি এক ক্রিকেটার। হাটেন ধীরে ধীরে । কিনত ব্যাটিং করেন দ্রুতগতিতে। যদিও ব্যাটিংয়ে থাকে না কোনো ঝড়। তারপরও তার ব্যাটিংয়ে অন্যরকম এক সৌন্দর্য্য আছে, যা আকর্ষণ করে সবাইকে। ছবির মতো কাভার ড্রাইভ দেখতে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে পারেন ত্রিকেটপ্রেমীরা। অবশ্য পেস বোলিংয়ের তুলনায় স্পিনে অনেক বেশী সাবলীল। বল টু বল খেলা পছন্দ রিয়াদের। ২৯ বছর বয়স্ক রিয়াদ এবার নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ খেলবেন। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে ৪ ম্য্যচ খেলে রান করেছিলেন মাত্র ৩২ এবং উইকেট নিয়েছিলেন ৩টি। চার বছরের ব্যবধানে অনেক পরিণত রিয়াদ এখন পর্যন্ত ১১০ ওয়ানডে খেলে রান করেছেন ২১২৩। কোনো সেঞ্চুরি নেই। সর্বোচ্চ ৮২ এবং হাফ সেঞ্চুরি ১১টি। উইকেট নিয়েছেন ৬৭টি। এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ এরমধ্যে ফর্মে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ৪২ ও ৩৬ রানের ইনিংস খেলে। এবারের আসরে টাইগারদের প্রধান প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সাফল্য পেতে রিয়াদের দিকে তাকিয়ে হবে দলকে।
শক্তিশালী দিক: আমি মতে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একজন ব্যাটসম্যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। হাটা চলাফেরায় গতি একটু স্লথ। কিন্তু সিঙ্গেল নেওয়ায় ভীষণ পারদর্শী। টেকিনকও ভালো। তার সবচেয়ে বড় গুন আমার দৃষ্টিতে, সেটা হচ্ছে ইনিংস লম্বার করার ক্ষমতা। এখন অনেক পরিণত ক্রিকেট খেলেন রিয়াদ। অফ স্পিনটা বেশ ভালো করেন। দলের প্রয়োজনে তার বোলিং যথেস্ট কাজে লাগবে।
দুর্বল দিক: হঠাৎ করে কনসেনট্রেশন হারিয়ে ফেলেন। এর ফলে বলে লাইনে যাননা। যাতে লেগ বিফোর হতে দেখা যায়। পেস বোলিংয়ে শর্ট বলে একটু দুর্বলতা রয়েছে। অবশ্য সব ব্যাটসম্যানেরই এই দুর্বলতা রয়েছে।
সাফল্য পেতে: ফর্মে রয়েছেন রিয়াদ। রান করছেন নিয়মিত। প্রস্তুতি দুটি ম্যাচে রান করেছেন। এটা দলের জন্য খুবই ভালো। যে কোনো পজিসনে ব্যাটিং করার সামর্থ্য রয়েছে রিয়াদের। এটা যে কোনো দলের জন্য প্লাস পয়েন্ট। আমি মনে করি রিয়াদকে উপরে ব্যাটিং করানো উচিত। কেননা তার লম্বা ইনিংস খেলার ক্ষমতা রয়েছে। তার অফ স্পিন খুব কার্যকরী। আমি মনে করি রিয়াদ হতে পারেন বাংলাদেশের ট্রাম্প কার্ড।