ঘরের দুয়ারে কড়া নাড়ছে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট বিশ্বকাপ। এই আসরে যাদের ওপর সবার নজর থাকবে এমন ১১ পেসারকে আমি তালিকায় রেখেছি। তবে এই তালিকায় পাকিস্তান কিংবা ভারতের কোনো বোলার নেই। আমি দেখেছি পাকিস্তানের কোনো বোলারই আহামরি ভালো করছে না। তবে পাকিস্তানিদের অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটানোর ক্ষমতা থাকে। ভারতের কোনো পেসারকেও আমার পছন্দ হয়নি। তবে আমি র্যাংকিং অনুসারে এই তালিকা করিনি। তাছাড়া বিশ্বকাপে কখন কি ঘটে যায় বলা কঠিন। তবে এটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত তালিকা।
১. মিচেল জনসন (অস্ট্রেলিয়া) : ঘরের মাঠে সব সময়ই দুর্দান্ত অস্ট্রেলিয়ার এই বোলার। তাছাড়া এবার আত্মবিশ্বাসও অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে জনসনের মধ্যে। নতুন বলে সে অপ্রতিরোধ্য। দ্রুত ব্রেক থ্রু এনে দিতে তার জুড়ি নেই। জনসন সব সময়ই প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি। তাই দল এবং অধিনায়ক তার দিকেই তাকিয়ে থাকবেন।
২. ডেল স্টেইন (দক্ষিণ আফ্রিকা) : জনসনের সঙ্গে স্টেইনের অনেক মিল। গত কয়েক বছরে আমি তার বোলিং দেখেছি, খুবই দায়িত্বশীল বোলার। বলের ওপর তার দারুণ নিয়ন্ত্রণ। পরিস্থিতি বুঝে সে বলের গতি পরিবর্তন করে দেয়। দলের যেকোনো বাজে পরিস্থিতিতেও দারুণ কিছু করার সামর্থ্য রাখেন তিনি।
৩. কেমার রোচ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) : বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান অস্ত্র কেমার রোচ। কিন্তু সে তার সতীর্থদের মতো তত লম্বা নয়। তবে বলে অনেক গতি আছে এবং লাইনলেন্থ চমৎকার। যদিও সাম্প্রতিক ইনজুরির কারণে নিয়মিত খেলতে পারেননি তিনি। তবে রোচ সুস্থ থাকলে তাকে রোখা খুবই কঠিন।
৪. প্যাট কামিন্স (অস্ট্রেলিয়া) : বলের ওপর দারুণ নিয়ন্ত্রণ তার। কিন্তু ইনজুরির কারণে নিজের সেরা দিতে পারেননি সব সময়। তবে তার সামর্থ্য আছে ভালো কিছু করার। তার স্লোয়ার ডেলিভারি খুবই মারাত্মক। কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়ে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। হতে পারে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলারও।
৫. জেরোমি টেলর (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) : অনেকটা কেমার রোচের মতোই। তার ভিতর স্পেশাল কিছু নেই। তবে বিশ্বকাপে সে রোচের সঙ্গে জুটি করে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। জেরোমি গতির সঙ্গে দুর্দান্ত সুয়িংও করাতে পারেন। ছন্দে থাকলে যেকোনো ব্যাটসম্যানকে বিপদে ফেলতে পারেন। তবে তার আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি।
৬. জেমস অ্যান্ডারসন (ইংল্যান্ড) : ইংল্যান্ডের সেরা বোলার সে। তার ওপর অনেক প্রত্যাশা। সুয়িংয়ের পাশাপাশি তার গতিও ভালো। তাছাড়া অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে সে সব সময়ই ভালো করে। নিজের সেরাটা দিতে পারলে বিশ্বকাপে অনেক ভালো কিছু করতে পারে।
৭. লাসিথ মালিঙ্গা (শ্রীলঙ্কা) : বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব থাকবে তার হাতেই। মালিঙ্গা খুবই ভালো করেই জানে তাকে কি করতে হবে। তবে তার ইয়োর্কার খুবই ভয়ঙ্কর। তবে তার বাউন্সারগুলোও দেখার মতো। তার বলের গতি বুঝাও ব্যাটসম্যানের জন্য অনেক কঠিন হয়ে যায়। তবে শেষের দিকে বোলিংয়ে দারুণ সফল মালিঙ্গা।
৮. মরনে মরকেল (দক্ষিণ আফ্রিকা) : উচ্চতার (৬ ফিট ৫ ইঞ্চি) কারণেই বোলিংয়ে বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে মরকেল। তার গতি ও বাউন্স অসাধারণ। সুয়িংয়েও দুর্দান্ত। তার বোলিং স্টাইলও চমৎকার। নতুন বলে স্টেইনের সঙ্গে জুটি গড়ে যেকোনো দলকে বিপদে ফেলে দিতে পারে।
৯. স্টিভ ফিন (ইংল্যান্ড) : ফিনও উচ্চতার জন্য বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে তার বাউন্স দুর্দান্ত। একটু ভুল করলেই বিপদে পড়ে যাবে ব্যাটসম্যানরা। অ্যান্ডারসনের সঙ্গে তার জুটিটাও অসাধারণ।
১০. ভারনন ফিল্যান্ডার (দক্ষিণ আফ্রিকা) : গতির চেয়ে সুয়িং এবং লাইনলেন্থের দিকেই বেশি নজর তার। যেকোনো দলের বিরুদ্ধে দ্রুত উইকেট নিয়ে পরিস্থিতি অনুকূলে রাখতে তার জুড়ি নেই। ফিল্যান্ডার যখন বোলিং করেন, তখন ভীষণ চাপে থাকে ব্যাটসম্যান। বলের ওপর তার নিয়ন্ত্রণও দারুণ।
১১. জেসন হোল্ডার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) : তার অভিজ্ঞতা বেশি নেই। তবে তার উচ্চতাই ব্যাটসম্যানদের যন্ত্রণার বড় কারণ। তার বাউন্স এবং ইয়র্কার দারুণ। সে ম্যাচ জয়ী বোলার। জোয়েল গার্নারের মতো বোলিং করে। তাছাড়া কার্টলি অ্যাম্ব্রসের কোচিং নিজেকে আরও শাণিত করছে জেসন।