ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্রিকেটার ভারতের শচীন টেন্ডুলকার। ছয়টি বিশ্বকাপে খেলেছেন। ৪৫ ম্যাচ থেকে রান করেছেন ২,২৭৮। ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও ভারতীয় এ কিংবদন্তি। ৪৬৩ ম্যাচে করেছেন ১৮,৪২৬ রান। ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারতকে ফাইনালে তুলেছিলেন একাই! ২০১১ বিশ্বকাপে ভারতের শিরোপা জয়ে বড় অবদান ছিল তার। অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ নিয়ে আইসিসির ওয়েবসাইটে লিখেছেন কলাম-
জাতীয় দলের হয়ে আমি ভারতীয় উপ-মহাদেশের বাইরে প্রথম সফর করেছিলাম নিউজিল্যান্ড, ১৯৯০ সালে। সর্বকালের সেরা গতিময় বোলারদের অন্যতম রিচার্ড হ্যাডলির বিরুদ্ধে খেলার জন্য উন্মুখ হয়েছিলাম। আমি কখনোই গ্রেটদের কাছ থেকে বিশেষ কিছু প্রত্যাশা করিনি। দলের অন্য ক্রিকেটারদের মতো তাদেরকেও মনে হয়েছে আমার। যাই হোক, নিউজিল্যান্ডে আমি আমার প্রথম ইনিংসে ডেনি মরিসনের বলে আউট হয়ে 'গোল্ডেন ডাক' মেরেছিলাম। কিউই বোলার দুর্দান্ত এক ডেলিভারি দিয়েছিল। বলার অপেক্ষা রাখে না, আমি একদম অপ্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলাম।
১৯৯২ বিশ্বকাপের আগে আমি অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম সফর করি ১৯৯১ সালে। ওই সফরটা আমার জন্য বিশেষ কিছু ছিল। সেই সফরেই সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের সঙ্গে আমার সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। ভারতের বাইরে আমার সবচেয়ে পছন্দের ভেন্যু সিডনি। সেই সফরেই অসি কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়েছিল। আমার ব্যাটিং হিরো ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল সেখানেই। তার সঙ্গে আমার তিন মিনিট কথা হয়েছিল, যা ছিল আমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা। আমি সাড়ে চার মাসের মতো অস্ট্রেলিয়ায় কাটিয়েছি। সেটা আমার ক্যারিয়ারে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
নিউজিল্যান্ডেও আমি ভালো সময় কাটিয়েছি। ১৯৯৪ সালে অকল্যান্ডে ওয়ানডেতে আমি ভালো করেছিলাম। সেটা আমার ক্যারিয়ারে মজার একটি অংশ হয়ে আছে। শুরু থেকেই আমি বোলারদের ওপর আক্রমণ করে খেলার চেষ্টা করি। ইনিংসের প্রথম দিকে ফিল্ডিং রেসট্রিকশনের ওভারগুলো আমি কাজে লাগাই। ১৯৯১-৯২ সালে কিউই বাম হাতি ব্যাটসম্যান মার্ক গ্রেটব্যাচ শুরুতে বোলারদের ওপর আক্রমণ করে সফল হন। তারপর আমিও শুরু করি। আমি সব সময় সতর্ক থেকেই বোলারের ওপর আক্রমণ করি। তাদের ছন্দকে নষ্ট করার চেষ্টা করি। অপেক্ষা করি, কখন শট বল পাব। পার্থ এবং ব্রিসবেন পেস বোলিংয়ের জন্য বিখ্যাত। বেশ বাউন্স থাকে, বোলাররা খুবই সুবিধা পেয়ে থাকে। এখানে বোলার এবং ব্যাটসম্যান উভয়কে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়।
একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে যদি পেস এবং বাউন্সকে বোঝা যায়, তবে সেরা বোলিংয়ের বিরুদ্ধেও ভালো করা অসম্ভব নয়। আর লাইন-লেন্থ ঠিক রাখতে পারলে যেকোনো উইকেটে ভালো করা সম্ভব। আর লাইন-লেন্থ ঠিক রাখতে না পারলে বাউন্সি উইকেটেও মার খেতে পারে। বিশ্বকাপে একজন ক্রিকেটারকে সদা-সর্বদা অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়। এই বিশ্বকাপে নতুন নিয়ম হয়েছে, ৫ জন ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের মধ্যে থাকবেন, আমার ক্যারিয়ারে কখনো এমন নিয়ম পাইনি। এতে বৃত্তের বাইরে থাকা ফিল্ডারদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে যাবে। এতে ব্যাটসম্যানরা অনেক বেশি সুবিধা পাবেন। এখানে উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া দুই ব্যাটসম্যানই যথেষ্ট। ঈশ্বর, তুমি বোলারদের সহায়তা কর!