আট মৌসুম অতিক্রম করছে। এরপরও পেশাদার ফুটবল লিগের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কথা হচ্ছে, কেন উঠবে? তাহলে কি পেশাদার লিগ আয়োজনে বাফুফে মনোযোগী নয়। সত্যি বলতে কি, এই একটা আসরই বাফুফে নিয়মিত করছে। এক্ষেত্রে দায়িত্বহীনতার পরিচয় সত্যিই দুঃখজনক। পেশাদার লিগে পেশাদারিত্ব মানা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। যদিও বাফুফে বলছে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পুরোপুরি শর্ত মেনে পেশাদার লিগ খেলা সম্ভব নয়। কিন্তু ব্যবস্থাপনা দুর্বল হবে কেন? বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃষ্টি হলেই মাঠ খেলার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এই অবস্থায়ও দলগুলোকে খেলতে হচ্ছে। পিচ্ছিল মাঠে যে কোনো সময় খেলোয়াড়রা বড় ধরনের ইনজুরির শিকার হতে পারেন। এরপরও বাফুফে খেলা চালিয়ে যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ছাড়া চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে লিগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম আবাহনী এ মাঠকেই হোম ভেন্যু হিসেবে বেছে নিয়েছে। চট্টগ্রাম কেন অন্য দলগুলো হোম ভেন্যু হিসেবে বিভিন্ন জেলা বেছে নিক এটা সবাই চায়। ঢাকার বাইরে যত ম্যাচ হবে ফুটবল লিগের আকর্ষণও তত বাড়বে। কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনায় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে তা কি মানা যায়? লিগের দ্বিতীয়পর্বের ম্যাচগুলো চট্টগ্রাম আবাহনী এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে খেলছে। অধিকাংশ দলই অভিযোগ তুলেছে এমন মাঠে স্বাভাবিক খেলা খুবই কষ্টকর। দেশের ১ নম্বর লিগ হবে সেখানে মাঠ নিয়ে অভিযোগ উঠবে কেন? এটা ঠিক স্বাগতিক দল হিসেবে শুধু মাঠ নয় অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেখাশোনার দায়িত্ব তাদের ওপর পড়ে। মঙ্গলবার এখানে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র ও চট্টগ্রাম আবাহনীর ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ম্যাচটি জিতলেই রানার্সআপ হতো শেখ রাসেল। তাই ম্যাচের তিনদিন আগেই রাসেল চট্টগ্রামে যায়। মাঠ শক্ত বলে শেখ রাসেলের কর্মকর্তা মীর শাহাবুদ্দিন টিপু চট্টগ্রাম আবাহনী কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ রাখেন মাঠে পানি দিয়ে রোলিং করতে। কিন্তু হোস্ট দল হয়েও তারা তা শোনেননি। এ জন্য বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের কাছে টেলিফোনও করেন টিপু। সাধারণ সম্পাদকের উচিত ছিল অভিযোগটা শোনা। কিন্তু তিনি ফোনই রিসিপ করেননি।
স্বাগতিক দলের দায়িত্ব অনেক। প্রতিপক্ষরা কোথায় উঠেছে বা সমস্যা হচ্ছে কিনা এসবের খোঁজখবর রাখা। কিন্তু চট্টগ্রাম আবাহনী এই সৌজন্যতাও দেখাননি। এনিয়ে অবশ্য শেখ রাসেলের তেমন আক্ষেপও নেই। মূলত মাঠ ঘিরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শেখ রাসেল। কথা হচ্ছে স্বাগতিক দলের দায়িত্বতো আছেই। কিন্তু লিগ কমিটির কি কোনো দায়িত্ব নেই। তাদের কারও কি উচিত ছিল না মাঠ খেলার উপযোগী কিনা তা দেখে আসা। তাহলে আর কমিটি করে লাভ হলো কি?
ঢাকা ছাড়ার আগে শেখ রাসেল রেফারি কমিটির চেয়ারম্যান বাদল রায়ের কাছে আপত্তি জানিয়ে গিয়েছিল, চট্টগ্রামে যেন চট্টগ্রামের রেফারি বা সহকারী রেফারি না থাকে। বাস্তবে তাও মানা হয়নি। একথা ঠিক সহজ সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করাতে শেখ রাসেল গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ড্র করেছে। কিন্তু রেফারির পক্ষপাতিত্ব বাঁশি ও ম্যাচের সৌন্দর্য নষ্ট করেছে। ঢাকার দলগুলো এমনিতেই বাইরে খেলতে চায় না। চট্টগ্রামে এবার যা হলো তাতেতো ক্লাবগুলো ঢাকার বাইরে না খেলার নতুন অজুহাত দাঁড় করাতে পারে। এ ব্যাপারে বাফুফেও নীরব। এমনিতেই ফুটবলের প্রতি ক্রীড়ামোদীদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। বড় বড় খেলাতেও দর্শক হচ্ছে না। এরপর যদি এমন দুর্বল ব্যবস্থাপনায় লিগ হয়ে থাকে তাতে যতটুকু আকর্ষণ আছে তাওতো ম্লান হয়ে যাবে।