১১২ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর দিনটা বাংলাদেশের বোলারদেরই ধরে নিয়েছিলো প্রায় সবাই। কিন্তু চেতেশ্বর পূজারা এবং শ্রেয়াস আয়ার মিলে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৪৯ রানের বড় জুটি গড়ে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিল ভারত। কিন্তু শেষ বিকেলে আবারও উইকেট এনে দিয়ে স্বস্তি দেন দিনজুড়ে দুর্দান্ত বোলিং করা তাইজুল ইসলাম। পরে মেহেদী হাসান মিরাজ দিনের একদম শেষ বলে উইকেট নিয়ে দিনটি পুরোপুরি নিজেদের করে নেন।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিনশেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭৮ রান করেছে সফরকারীরা।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল ভারত। ওপেনিং জুটিতেই তুলে ফেলেছিল ৪১ রান। তবে এরপরই বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরে এলো। ১৪তম ওভারে তাইজুল ইসলাম শুভমান গিলকে ফেরানোর পর থেকে যেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ।
শুভমান গিলকে বিদায় করে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম। এর পাঁচ ওভার পর লোকেশ রাহুলকে ফেরালেন খালেদ আহমেদ। ২২ রান করে সিলেটের এই পেসারের বলে বোল্ড আউটে ফেরেন ভারতীয় অধিনায়ক। এরপর পালা আসে বিরাট কোহলির। ভারতের তারকা এই ব্যাটারকেও এদিন খোলস ছেড়ে বের হওয়ার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরায় বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলাম এক রানে থাকা অবস্থায় কোহলিকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন।
এরপর হাল ধরেন চেতেশ্বর পূজারা ও ঋষভ পন্থ। নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করতে থাকেন পন্থ। ৪ চার ও ১ ছক্কায় ২৬ বলে ২৯ রান করে যান লাঞ্চের বিরতিতে। দ্বিতীয় সেশনের দ্বিতীয় বলেই এবাদতের ওভারে পূজারা ক্যাচ দিয়েছিলেন উইকেটের পেছনে। কিন্তু নুরুল হাসান সোহান ধরতে পারেননি সেটি।
কিছুক্ষণ পর পন্থকে ফিরিয়ে স্বাগতিক শিবিরে স্বস্তি আনেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার আর্ম বলে প্লেইড অন হয়ে সাজঘরে ফেরত যান পন্থ। ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৪৫ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। ভাঙে পূজারার সঙ্গে তার ৬৪ রানের জুটি। দ্বিতীয় সেশনের বাকি সময় শ্রেয়াস আয়ারের সঙ্গে কাটিয়ে দেন পূজারা।
তৃতীয় সেশনে ছুটতে থাকেন তারা। এর মধ্যে মিরাজের করা ৭৬তম ওভারে জীবন পান শ্রেয়াস আয়ার। মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে তার ক্যাচ ছাড়েন এবাদত হোসেন। জীবন পেয়ে ছুটছেন আয়ার। প্রথম দিনশেষে তাকে আউট করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা।
তাকে ফেরাতে না পারলেও আরেক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা পূজারাকে ঠিকই ফিরিয়েছে বাংলাদেশ। দিনে বেশ কয়েকবারই পূজারাকে পরাস্ত করেছিলেন তাইজুল। কিন্তু পাচ্ছিলেন না কাঙ্ক্ষিত উইকেটের দেখা। ৮৫তম ওভারে এসে পূর্ণ হয় তার আকাঙ্ক্ষা। অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে হালকা টার্ন করা বল আঘাত হানে স্টাম্পে। সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ১১ চারে ২০৩ বলে ৯০ রান করে ফিরতে হয় পূজারাকে। আয়ারের সঙ্গে ১৪৯ রানের জুটি ভাঙে তার।
পরে দিনটিকে পুরোপুরি বাংলাদেশের করার দায়িত্ব নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই স্পিনার ২৬ বলে ১৩ রান করা অক্ষর প্যাটেলকে এলবিডব্লিউ করেন। ভারতীয় ব্যাটার রিভিউ নিলেও বাঁচতে পারেননি। তার আউটের পরই দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করা হয়। তবে ১৬৯ বলে ৮২ রান করে অপরাজিত আছেন আয়ার।
বাংলাদেশের পক্ষে ৩০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৮৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ১৮ ওভারে ৭১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। ১২ ওভারে ১ উইকেট পেয়েছেন খালেদ আহমেদও।
বিডি প্রতিদিন/এমআই