ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের কাছে প্রথম দু’টি টেস্ট হারের পর করাচিতে স্পিন সহায়ক উইকেট তৈরি করেছিল পাকিস্তান। তাতেও নিস্তার মেলেনি বাবর আজমদের। বেন স্টোকসের দলের তরুণ স্পিনার রেহান আহমেদ অভিষেক টেস্টে একাই শেষ করে দিয়েছেন পাকিস্তানের ব্যাটারদের ইনিংস।
কে এই রেহান? ১৮ বছরের তরুণকে বলা হচ্ছে ইংল্যান্ডের সব থেকে প্রতিভাবান স্পিনার। ইংলিশ ক্রিকেটের স্পিন আক্রমণের ভবিষ্যৎ বলা হচ্ছে তাকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্টে সাত উইকেট নিয়েছেন রেহান। তার মধ্যে পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন দ্বিতীয় ইনিংসে।
অভিষেক টেস্টে কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজিরও গড়েছেন। ভেঙে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলার প্যাট কামিন্সের ১১ বছরের রেকর্ড। কামিন্স অভিষেক টেস্টে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন ১৮ বছর ১৯৬ দিন বয়সে।
২০১১ সালের নভেম্বরে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এই নজির গড়েছিলেন কামিন্স। রেহান একই কীর্তি গড়েছেন ১৮ বছর ১২৬ দিন বয়সে।
জন্ম ইংল্যান্ডের নটিংহ্যামে হলেও রেহান আসলে পাকিস্তান বংশোদ্ভূত। তার বাবা নাঈম আহমেদও ক্রিকেটার ছিলেন। রেহানের মতো স্পিনার নন, তিনি ছিলেন পেস বোলার। ক্রিকেট খেলার জন্য পাকিস্তান থেকে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন নাঈম। পরে সেখানেই স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি অবশ্য কখনও পাকিস্তানের হয়ে খেলেননি। বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তাই ছেলেকেও ক্রিকেটার তৈরি করতে চেয়েছিলেন তিনি। ছোট বয়সেই ভর্তি করে দেন নটিংহ্যামশায়ারের অ্যাকাডেমিতে। ২০১৭ সালে রেহান যোগ দেন লেস্টারশায়ারে। তার প্রতিভা দেখে দলে নেন লেস্টার কর্তারা। রেহানের দুই ভাই ফারহান আহমেদ এবং রাহিম আহমেদও ক্রিকেটার। তিন ভাইয়ের মধ্যে রেহানই অবশ্য সব থেকে প্রতিভাবান। অর্থাৎ, তার গোটা পরিবারই ক্রিকেট খেলে। মাত্র তিনটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেই সুযোগ পেয়েছেন টেস্ট দলে। ইংল্যান্ডের দ্য হান্ড্রেড প্রতিযোগিতাতেও ভাল পারফরম্যান্স করেছিলেন।
চলতি বছরে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড দলের সদস্য ছিলেন রেহান। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আয়োজিত সেই প্রতিযোগিতায় চারটি ম্যাচ খেলে ১২ উইকেট নিয়েছিলেন তরুণ লেগ স্পিনার। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে নেট বোলার হিসেবে স্টোকসদের সঙ্গে ছিলেন। সিরিজের আগে একটি প্রস্তুতি ম্যাচে ইংল্যান্ড লায়নসের হয়ে রেহান নজর কাড়েন টেস্ট দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামের।
তৃতীয় টেস্টে প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান তোলে ৩০৪ রান। এর জবাবে ইংল্যান্ড করে ৩৫৪ রান। মাত্র ৫০ রানে লিড ছিল তাদের। কিন্তু সেই সুবিধা নিতে পারেননি বাবররা। তারা দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২১৬ রান করেন। রেহানের স্পিনের সামনে ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের মিডল অর্ডার। ইংল্যান্ডের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬৭ রান। দু’উইকেট হারিয়ে জয়ের রান তুলে নেন স্টোকসরা।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত