আইনজীবী নিয়োগ না করে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি (ChatGPT) ব্যবহার করে আদালতের একটি মামলায় জয়ী হয়েছেন কাজাখস্তানের ২৩ বছর বয়সী এক তরুণ। এর মাধ্যমে তিনি ট্র্যাফিক আইন ভঙ্গের অভিযোগে হওয়া জরিমানা প্রত্যাহার করাতে সক্ষম হয়েছেন।
অডিটি সেন্ট্রালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাজাখস্তানের ২৩ বছর বয়সী তরুণ কেনজেবেক ইসমাইলভ তাঁর মাকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। পথে একটি গাড়ি কোনো কারণ ছাড়াই থেমে গিয়ে এক লেনের রাস্তায় যানজট সৃষ্টি করে। কিন্তু কেনজেবেকের হাসপাতালে যাওয়ার তাড়া ছিল। তাই তিনি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর বাস লেন ব্যবহার করে গাড়িটিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এর ফলস্বরূপ দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ আইন ভঙ্গের জন্য তাঁকে ৫ হাজার ৮০০ টেঙ্গে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৩০০ টাকা) জরিমানা করেন।
কিন্তু কেনজেবেক মনে করেন, এই জরিমানা অন্যায্য। কারণ, তাঁর কাছে তাঁর মাকে হাসপাতালে নেওয়া জরুরি ছিল। তাই তিনি ট্রাফিক পুলিশের জরিমানার বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেন, তবে তাঁর আপিল প্রত্যাখ্যান করা হয়।
এরপর কেনজেবেক আদালতে একটি মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন। আর এই পুরো প্রক্রিয়ায় পরামর্শ নেওয়ার জন্য চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেন কেনজেবেক। একজন আইনজীবী নিয়োগ করার সামর্থ্য তাঁর ছিল না, তাই তিনি চ্যাটজিপিটির সাহায্য নিয়ে একাই মামলা লড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
তাঁর পরিস্থিতি চ্যাটজিপিটিকে ব্যাখ্যা করার পর এআই চ্যাটবট তাঁকে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেয় এবং একটি অভিযোগ লিখতে সাহায্য করে। চ্যাটজিপিটি তাঁকে সময়সীমা থাকা সত্ত্বেও জরিমানা পরিশোধে তাড়াহুড়ো না করার পরামর্শও দেয়, কারণ, এটি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সমতুল্য হবে।
তবে ইতিমধ্যে জরিমানা পরিশোধ করা সত্ত্বেও তিনি চ্যাটজিপিটির অন্যান্য নির্দেশ অনুসরণ করেন এবং আদালতে যান। সেখানে বিচারক তাঁকে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করেন, যার উত্তরে কেনজেবেক চ্যাটজিপিটির দেওয়া উত্তরগুলো স্পিচ সিন্থেসিস ফাংশন ব্যবহার করে পড়ে শোনান। বিচারক কেনজেবেকের উত্তরগুলো শোনেন এবং যৌক্তিক বিবেচনা করে তাঁর পক্ষে রায় দেন। জরিমানাও বাতিল করেন।
এই মামলায় জিতে কেনজেবেক উল্টো ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে জরিমানা ও তাঁর নষ্ট হওয়া সময়ের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/আশিক