গত এক দশকে স্মার্টফোন ডিজাইনে বিপ্লব এসেছে -ডিভাইসগুলো হয়েছে স্লিম, হালকা এবং দৃষ্টিনন্দন। তবে এ পরিবর্তনের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাকের বিলুপ্তি ছিল সবচেয়ে আলোচিত সিদ্ধান্ত। যদিও প্রাথমিকভাবে অডিওপ্রেমীরা এ পরিবর্তন নেতিবাচকভাবে নিয়েছিলেন, কিন্তু প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেখা যায়, আধুনিক স্মার্টফোন ডিজাইনে জ্যাক না থাকা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা এনেছে। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট মেক ইউজ অব-এর মতে, হেডফোন জ্যাক বাদ দেওয়ায় পাঁচ সুবিধা পাওয়া গেছে-
প্রথমত, হেডফোন জ্যাক হলো ডিভাইসের একটি উন্মুক্ত পথ, যা জল, ধুলো ও ময়লা প্রবেশের সুযোগ দিত। জ্যাক অপসারণের কারণে নির্মাতারা ফোনের অভ্যন্তরীণ অংশকে আরও ভালোভাবে সুরক্ষিত করতে পেরেছেন। এর ফলস্বরূপ, বেশির ভাগ আধুনিক স্মার্টফোন এখন IP68 রেটিং ধারণ করে, যা জল ও ধুলোর বিরুদ্ধে উচ্চতর প্রতিরোধ নিশ্চিত করে। দ্বিতীয়ত, ইউএসবি-সি পোর্টের ব্যবহার বৃদ্ধি আরেকটি বড় সুবিধা। এই একক পোর্ট এখন চার্জিং, ডেটা ট্রান্সফার এবং উচ্চ মানের ডিজিটাল অডিও- তিনটি কাজই অনায়াসে সম্পন্ন করতে পারে। ফলে একাধিক তার বা জ্যাক বহন করার ঝামেলা দূর হয়েছে। তৃতীয়ত, ৩.৫ মিলিমিটার জ্যাকের স্থানটি ছোট মনে হলেও, এটিকে বসাতে সার্কিটসহ ভিতরের বেশ খানিকটা জায়গা প্রয়োজন হতো। জ্যাক না থাকায় সেই অতিরিক্ত স্থানটি এখন আরও গুরুত্বপূর্ণ হার্ডওয়্যার যেমন : বড় ব্যাটারি, উন্নত কুলিং সিস্টেম, বা শক্তিশালী প্রসেসিং ইউনিট যুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে ফোনগুলো দ্রুত কাজ করছে, সহজে গরম হচ্ছে না এবং ডিজাইন আরও পাতলা হয়েছে। চতুর্থত, এই পরিবর্তন ওয়্যারলেস অডিও প্রযুক্তির বিকাশকে ত্বরান্বিত করেছে। ব্লুটুথ হেডফোন ও ইয়ারবাড এখন উচ্চমানের সাউন্ডের পাশাপাশি তারহীন স্বাধীনতা দিচ্ছে। এবং সবশেষে দীর্ঘমেয়াদে এই পরিবর্তন স্মার্টফোনকে করেছে আরও স্মার্ট, টেকসই ও আধুনিক। পরিবেশবান্ধব, কার্যকর এবং ব্যবহারবান্ধব এই নকশা আজকের ডিজিটাল জীবনে এনে দিয়েছে নতুন সুবিধা ও অভিজ্ঞতা।
তথ্যসূত্র : মেক ইউজ অব