অবৈধভাবে পাহাড়সহ জায়গা দখল-বেদখলের রাজত্ব চলছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বায়েজিদ থানার জালালাবাদ ওয়ার্ডের বাংলাবাজার এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে এসব কর্মকাণ্ডে প্রশাসনের দায়িত্বশীলরাও আতঙ্কের মধ্যে থাকেন। কয়েক বছর আগে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান বাদল খুন হন। এ খুনের সঙ্গে জড়িতরা ভিন্ন কৌশলে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় নতুন করে রাজত্ব সৃষ্টি করে আসছে। এতে সাধারণ মানুষের জায়গাসহ পাহাড় দখলের শেষ নেই। পাহাড়ে গড়ে তুলেছে বড় বড় বস্তিও। পাহাড় ছাড়াও ব্যক্তি মালিকানার জমি হলেও কৌশলে মালিকানা দাবি করেন। এরপর শুরু হয় সমঝোতার নামে চাঁদার দাবি।
এসবের নেপথ্যে কাজ করছে দিদার, জসিম ও মহিউদ্দিনসহ একটি গ্রুপ। সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে তাদের নেতৃত্বে নেশাগ্রস্ত শতাধিক লোকজন মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্নভাবে আধিপত্য বিস্তার করছে।
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, এখানে মৌখিকভাবে একটা অভিযোগ পেয়েছি জায়গা দখলের। সে বিষয়ে সরেজমিন গিয়েছি এবং বিষয়টি বিস্তারিতভাবে তদন্তও করা হচ্ছে। এ এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কোনো সুযোগ নেই। প্রশাসন সবসময় প্রস্তুত আছে। সন্ত্রাসী যেই হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পাহাড় দখলসহ অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সরেজমিন জানা যায়, এলাকায় পৈতৃক কিংবা ক্রয়সূত্রে কোনো জায়গা কিনে দখলের আগেই চাঁদা দিতে হয়। নয়তো রাতারাতি নিজেরাই জায়গা দখলে নিয়ে সাইন বোর্ড টাঙিয়ে দেয়। বায়েজিদে মাদকাসক্ত তরুণ-যুবকদের সঙ্গে নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে সংঘবদ্ধ এ চক্র।
এমন একটি গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে আছে দিদার-মহিউদ্দিন-পানি জসিম, মিল্টন বড়–য়া, মোস্তফা কামাল ওরফে ইয়াবা কামালরা। সেখানে তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। যাদের কাজই হচ্ছে জায়গা দখল-বেদখল ও শিল্প কারখানায় চাঁদাবাজি। স্থানীয়রা ভয়ে কারও নামও প্রকাশ করতে পারে না।
বাংলাবাজারের এক বাসিন্দা জানান, সম্প্রতি জালালাবাদ ওয়ার্ড এলাকার বাংলাবাজারে বিপণিবিতান কর্তৃপক্ষের একটি জায়গার একাংশ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দখলে নিয়েছে সিন্ডিকেটটি। পরে শুনেছি জায়গার মালিকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা চেয়েছে। চারপাশে টিনের বেড়া দিয়ে নির্মাণ করেছে টিনশেড ঘর। দখলের একদিন পর সেখানে একটি সাইন বোর্ডও টাঙিয়ে দিয়েছে। এখন কেউ সাইন বোর্ড নামাতে গেলেই রক্তপাত ঘটবে। ওরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সবসময় ঘটনা ঘটাতে প্রস্তুত থাকে। জানা যায়, বায়েজিদের বাংলাবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ লেগেই থাকে। রাজনৈতিক গ্রুপের আশ্রয়ে থেকে নিজেরাই সৃষ্টি করেছেন বিভিন্ন উপ-গ্রুপ। তারা এসব গ্রুপ-উপগ্রুপের আড়ালে নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকে।