বরুণ ফুল সাধারণত ফোটে বৈশাখ মাসে। এটি গ্রীষ্মকালীন ফুল। কিন্তু রংপুরে দুর্লভ এই বরুণ ফুলের দেখা মিলেছে আশ্বিন মাসে। অসময়ে এই ফুল ফোটায় প্রকৃতি প্রেমীদের মাঝে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।
বরুণ ফুল সম্পর্কে জানা গেছে, বসন্তের নতুন পাতার পরে গ্রীষ্মের শুরুতে বড় থোকায় সাদা এবং বেগুনি রংয়ের এই ফুলটি ফোটে। বোঁটা ৩ থেকে ৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। পাপড়ি ৫টি ও মুক্ত। জলাভূমি ও নদীর তীরে দেখা মেলে এই গাছের। ১০ থেকে ১৫ মিটার উঁচু হয়ে থাকে এই গাছ। মূল বোঁটা ১০ থেকে ১৫ মিটার উঁচু। পাতার উপরে চকচকে, নিচে ফ্যাঁকাসে রংয়ের দেখায়। বরুণ ফুলের একাধিক নাম রয়েছে যেমন বর্না, বালাই, অবিয়ুচ, বিদাসি ইত্যাদি। এটি জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের স্থানীয় গাছ। এর ফল গোলকার বা ডিম্বাকার এবং শক্ত ও শাঁসাল হয়ে থাকে। বরুণ ভেষজগুণ সম্পন্ন গাছ হিসেবে পরিচিত। এর পাতা চর্মরোগ, ব্যথা, বাত নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়। শিকড়ের বাকলের নির্যাস গ্যাস্ট্রিক রোগে ব্যবহার করা হয়। কাঁচা ফল রান্না করে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।
এই ফুলের দেখা মিলেছে রংপুর নগরীর সেনপাড়ার বাসিন্দা রানা মাসুদের বাড়িতে। তিনি একজন সৌখিন ফটো সাংবাদিক, কবি ও লেখক। ফুল, ফল, পাখি এবং ছবি তোলা নিয়েই তার কাজ।
তিনি বলেন,বছর দুয়েক আগে চারটা বরুণ চারা মানিকগঞ্জ থেকে এনেছিলাম। মানিকগঞ্জে বরুণ, ভেন্ন্যা বা বইন্যা নামে পরিচিত। তিনটি গাছ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু সেগুলো বাঁচেনি। আমাদের বাড়ির গাছটা টিকে গেছে এবং দুর্বল লিকলিকে শরীর নিয়ে বেড়ে উঠেছে। একটা ডালে একগুচ্ছ ফুল দেখা গেছে। প্রথমে ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিল না কেননা বরুণ গ্রীষ্মকালীন ফুল। চৈত্র -বৈশাখ মাসে ফোটে। এখন আশ্বিন চলছে। তাই কিছুটা ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। তিনি বলেন, আমার জানা মতে রংপুরে দুটি বরুণ গাছ রয়েছে। একটি মাহিগঞ্জ মন্দিরের পাশে অপরটি আমার বাড়িতে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই