ছাত্র-জনতার রক্তস্রোতের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে তা যাতে কোনো প্রতিবিপ্লবের কারণে হাতছাড়া না হয় তার জন্য অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা।
গতকাল রাজধানীর রাওয়া কমপ্লেক্সে রাওয়া রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডি ফোরাম (আরআরএসএফ) আয়োজিত ‘জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বিপ্লবে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান এবং বিপ্লবোত্তর ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এ আহ্বান জানানো হয়।
সেমিনারে বক্তব্য দেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. নাসিমুল গনি, লে. কর্নেল (অব.) মোশাররফ, লে. কর্নেল (অব.) মনীষ দেওয়ান, প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ, প্রফেসর ড. শহীদুজ্জামান, ডা. জাহেদ উর রহমান ও লে. আবু রুশদ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শাহাদাতবরণকারী সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া-মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিমুল গনি (অব.) বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ গড়ার নতুন সুযোগ হয়েছে। কাক্সিক্ষত দেশ গড়তে দেশপ্রেমিক, নিবেদিত মানুষ এবং সঠিক তদারকি প্রয়োজন। দেশ সংস্কারকাজে চার জায়গা থেকে জনবল নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি অফিসার, প্রবাসী এবং বিদেশ থেকে সংশ্লিষ্টদের দিয়ে সংস্কারকাজ করা সম্ভব। সশস্ত্র বাহিনীতে বিভিন্ন খাতে দক্ষ অবসরপ্রাপ্ত ৪ হাজার জনবল আছে। অপরাধীদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত সরকার সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীও ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সশস্ত্র বাহিনীসহ সব জায়গায় মেধাহীন নিয়োগ দিয়ে নৈরাজ্য তৈরি করেছে। অনেক সংকট ও ৪০ লাখ মামলা রেখে গেছে। এখনো প্রতিবিপ্লবের জন্য টাকা ছড়ানো হচ্ছে। চিহ্নিতদের ভাসানচর নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
লে. কর্নেল মোশাররফ বলেন, গণ অভ্যুত্থানে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা ছিল অগ্রভাগে। সাবেক ও বর্তমান সৈনিক থেকে সব স্তরের কর্মকর্তা এ সফলতার অংশীদার। অথচ অভ্যুত্থানের এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও আমরা অবহেলিত। তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গণ অভ্যুত্থানে দুই ভাবে ভূমিকা রেখেছেন। অবসরপ্রাপ্তরা সরাসরি মাঠে নেমেছেন এবং চাকরিরতরা চূড়ান্ত সময়ে অবদান রেখেছেন। আবু সাঈদ হত্যার পর সেনাবাহিনীর সব স্তরের সদস্য মাঠে নামেন।
ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, গণ অভ্যুত্থানের পর দেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের একজন মন্ত্রী তাঁদের সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেন। একই সঙ্গে মিয়ানমারে সিভিল যুদ্ধ। বাংলাাদেশের সীমানায় মর্টার শেল পড়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছে অনেক, মারাও গেছে। সে প্রেক্ষাপটে আমাদের সেনাবাহিনী কি প্রস্তুত?
অধ্যাপক ড. শহীদুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। এটা সন্ত্রাসী সংগঠন। এ দলটি সরকারে থাকাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সন্ত্রাসী হিসেবে গড়ে তুলেছে।