বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে আজ গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছে। এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। আজকে সারা ঢাকা শহর জনগণের শহরে এবং গোটা দেশ জনতার সমুদ্রে পরিণত হয়েছে। জাতির এই ক্রান্তি লগ্নে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে গণতন্ত্র প্রিয় আপামর জনসাধারণ এবং বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি রাজপথে নেমে এসে ছাত্র-জনতার সঙ্গে একাত্ম হয়ে গণহত্যাকারী স্বৈরাচার সরকার পতনের আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানান তিনি। গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ আহ্বান জানান। এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও বেগম সেলিমা রহমানসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে এই দেশকে ধ্বংস করেছে। একে রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়। এদেরকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।
শতাধিক ছাত্র জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে- মির্জা ফখরুল : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়ে শতাধিক ছাত্র জনতাকে হত্যা করেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন আরও সহস্রাধিক মানুষ।
সরকার পরিকল্পিতভাবে সংঘাত, সংঘর্ষ উসকে দিয়ে আন্দোলনের বিজয় নস্যাৎ করতে চায়। আন্দোলনরত জনগণ সরকারের ষড়যন্ত্র চক্রান্ত ব্যর্থ করে বিজয় ছিনিয়ে আনবে ইনশাআল্লাহ। গত রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব দেশবাসীসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তথা ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলনের আজকের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি সফল করাসহ সংশ্লিষ্টদের নিজ নিজ এলাকাতেও আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি সব রাজনৈতিক দলের প্রতি ছাত্র-জনতার চলমান গণ আন্দোলনে তাদের পাশে থাকার আহ্বান জানান। বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে ছাত্র-জনতার দাবি মেনে ক্ষমতা থেকে অবিলম্বে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, পূর্ব ঘোষণা দিয়ে সারা দেশে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ তাদের সশস্ত্র নেতা-কর্মী জমায়েত করে গণতন্ত্রকামী ছাত্র-জনতার ওপর লেলিয়ে দেয়। ঢাকার ধানমন্ডি, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, মিরপুর, উত্তরা, তোপখানা রোডসহ বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুলিবর্ষণ করে। সমগ্র দেশকেই আজ রণক্ষেত্রে পরিণত করে হত্যা, নির্যাতন ও বল প্রয়োগ করে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা চালায়। আলোচনার কথা বলে নির্বিচারে গুলি করে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করছে স্বৈরাচারী এ সরকার।
মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য ইন্টারনেট, ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়। আন্দোলন দমন ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে সন্ধ্যা থেকে আবারও সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে।