অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনকে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘরে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রনায়কের পরিণতির নিদর্শন সংরক্ষণেই গণভবনকে জাদুঘর বানানো হবে। গতকাল গণভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশে নয়, আমরা পৃথিবীর বুকেই এ জাদুঘরকে একটি নিদর্শন করে রাখতে চাই। স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট, খুনি রাষ্ট্রনায়কদের আসলে কী পরিণতি হয় এবং জনগণই যে ক্ষমতার মালিক তারই নিদর্শন হিসেবে গণভবনটিকে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা আমাদের প্রাথমিক ভিজিট ছিল। এখানে গণপূর্ত এবং স্থাপত্য বিভাগের যারা দায়িত্বে আছেন তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকে আমরা প্রাথমিক পরামর্শ নিয়েছি এবং আমাদের আকাক্সক্ষা, আমরা কীভাবে একে দেখতে চাই তা বলা হয়েছে। এ ছাড়া ফরমাল কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজকের মধ্যেই হয়তো কমিটি গঠন হয়ে যাবে। কমিটি হয়ে গেলে আগামী সপ্তায় কাজ শুরু হবে। দ্রুত যেন এটি আমরা উদ্বোধন করতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাদুঘরে প্রথমত ৩৬ দিনের অভ্যুত্থানের স্মৃতি ও দিনলিপি থাকবে। যারা এ আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন তাদের স্মৃতি থাকবে, তালিকা থাকবে। এ ছাড়া গত ১৬ বছরে যে নিপীড়ন হয়েছে, যারা গুম হয়েছেন, যাদের বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা থাকবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, গণভবন যে ভগ্নাবশেষ অবস্থায় রয়েছে, সেটিকে সর্বোচ্চ সেই অবস্থায় রেখে জাদুঘরটি করা হবে। এখানে কিছু ডিজিটাল রিপ্রেজেন্টেশন থাকবে। আসলে গত ১৬ বছরের একটি চিত্রই সেখানে তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে।’ উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘গণভবন জনগণের জন্য ছিল কতখানি?
আমরা জনগণের জন্য এটি উন্মুক্ত করছি। আমাদের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদী শাসকের পক্ষ থেকে যে আচরণ করা হয়েছিল, কোনোভাবেই সে ধরনের আচরণ যেন কারও প্রতি আর না হয় তা নিশ্চিত করব।’ যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘গণ অভ্যুত্থানের স্মৃতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে জনগণের ওপর যে অত্যাচার, গুম, খুন, নিপীড়ন হয়েছে তার স্মৃতি সংরক্ষণ করে গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে। এ জাদুঘর জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সে উদ্দেশেই আমরা প্রাথমিকভাবে গণভবন পরিদর্শনে এসেছি। গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করতে একটা কমিটি গঠন করা হবে। স্থাপত্যবিদ ও জাদুঘর বিশেষজ্ঞরা এ কমিটিতে থাকবেন।’