ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের জাতীয় ফরেনসিক ইনস্টিটিউটের ময়নাতদন্তে এটি নিশ্চিত করা হয়েছে। সিনওয়ার তার বাহুতে গুলিবিদ্ধ হন এবং পরে মাথায় গুলি লেগে মৃত্যু হয়। ইসরায়েলি সেনারা দক্ষিণ গাজার রাফায় নিয়মিত অভিযান চালানোর সময় হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে গোলাগুলি হয়, যেখানে সিনওয়ার নিহত হন।
ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, ঘটনার সময় তারা জানত না যে সিনওয়ার সেখানে ছিলেন। তার মরদেহ থেকে আঙুলের ছাপ এবং ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ইসরায়েল নিশ্চিত হয় যে তিনি নিহত হয়েছেন। যদিও হামাসের প্রধান সিনওয়ার ইসরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় ছিলেন, তবুও অভিযানের সময় তাকে শনাক্ত করা যায়নি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, হামাসের দুই যোদ্ধা একটি ভবনে আশ্রয় নেন, এবং তৃতীয় জন অন্য একটি ভবনে ঢুকে পড়ে। ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষের এক পর্যায়ে জানা যায়, তৃতীয় ব্যক্তি ছিলেন সিনওয়ার। ইসরায়েলি বাহিনীর প্রকাশিত ড্রোন ফুটেজে দেখা গেছে, ধুলোমাখা অবস্থায় একজন ব্যক্তি চেয়ারে বসে আছেন, যার হাতে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মুখ স্কার্ফ দিয়ে ঢাকা ছিল, এবং সেই ব্যক্তি ড্রোনের দিকে লাঠি ছুড়ছিলেন।
ইসরায়েলের ন্যাশনাল ফরেনসিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক চেন কুগেল ময়নাতদন্ত করে জানান, গুলির আগেই সিনওয়ারের ডান বাহুতে গুরুতর আঘাত লেগেছিল, যা সম্ভবত ক্ষেপণাস্ত্র বা ট্যাংক শেলের আঘাত থেকে হয়েছে। আঘাতের চারপাশে তিনি ইলেকট্রিক তার বেঁধে রক্তপাত বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তা কাজে আসেনি।
চেন কুগেল আরও বলেন, ড্রোন ফুটেজে দেখা যায়, সিনওয়ার আহত অবস্থায় একটি লাঠি ছুড়ে মারেন, তবে ড্রোনটিকে আটকাতে পারেননি। এরপরই তাকে মাথায় গুলি করা হয়। যদিও গুলি কে ছুড়েছিল এবং কোন অস্ত্র থেকে তা করা হয়েছিল, সে বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
অভিযানের পরের দিন সকালে ইসরায়েলি সেনারা একটি ভবনে সিনওয়ারের মরদেহ উদ্ধার করে। ওই ভবনটি আংশিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় ছিল। প্রথমে তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত না হলেও, পরে তার আঙুলের ছাপ এবং ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় যে এটি সিনওয়ারের মরদেহ।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল