খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে একই প্রতিষ্ঠানের ইন্সট্রাক্টর (বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স) ও বিভাগীয় শিক্ষক সোহেল রানাকে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনায় পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল বেলা ১১টা থেকে প্রতিষ্ঠান অধ্যক্ষের কক্ষে অভিযুক্ত সোহেল রানাকে অবরুদ্ধ করে রাখে একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১টার দিকে গণপিটুনি দেওয়ার পর ওই শিক্ষককে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ভাঙচুর হয়েছে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র। আহত হয়েছেন পুলিশসহ অন্তত ১৫-২০ জন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা থেকে চেঙ্গী স্কয়ার পর্যন্ত পাহাড়ি-বাঙালি দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা এ সময় পাশাপাশি স্থাপনা ও দোকানপাট ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশসহ কয়েকজন আহতের খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা সদরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সদর উপজেলার ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ্র রায় স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। নিহত সোহেল রানার বিরুদ্ধে এর আগেও ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। মামলায় অব্যাহতি পাওয়ার পর তিনি আবার চাকরিতে ফেরত এলে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা এর বিরোধিতা শুরু করে। খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাতেন মৃধা ঘটনায় একজন নিহত ও পাঁচজন আহত বলে জানান। শহরে সেনাবাহিনী, বিজিবি পুলিশ পুরো শহরে টহল দিচ্ছে। কিছুদিন ধরেই শিক্ষক সোহেল রানাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীরা। খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. রিপ্পল বাপ্পী জানান, নিহতের লাশ পোস্ট মর্টেম শেষে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ফ্রিজিং করে রাখা হয়েছে।
আহত ১৫ জনের মধ্যে পাঁচজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ ছাড়া শহরের পানখাইয়াপাড়া সড়কেও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেলা শহরের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি থমথমে অবস্থায় রয়েছে।