বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সড়ক পরিবহন শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাংবাদিক হাসান মাহমুদকে হত্যায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজীকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে আদালতে হাজির করে তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এর পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বাদী ফাতেমা অভিযোগ করেন, সাংবাদিক হাসান মাহমুদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৩১ জুলাই রাত দেড়টার দিকে মুগদাপাড়ার বাসা থেকে বের হন। রাতে আর বাসায় ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারেন সাদা পোশাকধারী অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জন লোক হাসান মাহমুদকে তুলে নিয়ে গেছে। পরে জানতে পারেন গোড়ান ছাপড়া মসজিদের সামনে তার স্বামী পড়ে আছেন। ভোর ৫টার সময় মুগদা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট দিবাগত রাতে ঢাকার শান্তিনগরের বাসা থেকে গোলাম দস্তগীরকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। পরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রূপগঞ্জে গুলিতে নিহত দশম শ্রেণির ছাত্র রোমান মিয়া হত্যা মামলায় তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এ ছাড়া গত ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের নিহত শফিকুল ইসলাম শফিক ও বাবুল হত্যা মামলায় তিন দিন করে মোট ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার পারভেজ হত্যা মামলায় গোলাম দস্তগীর গাজীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে ২৯ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে হাসান মাহমুদের স্ত্রী ফাতেমা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত অভিযোগটি খিলগাঁও থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। এর পর খিলগাঁও থানা মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক এমপি শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু ও শাহজাহান খান, মশিউর রহমান রাঙ্গা, এনায়েত উল্লাহ, এরফান সেলিম, লোটাস কামাল, আতিকুল ইসলাম, ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশীদ ও পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার।