দুর্বৃত্তের গুলিতে প্রাণ হারালেন ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি, অজিত পাওয়ার গোষ্ঠী) নেতা বাবা সিদ্দিকী। ১২ অক্টোবর রাতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা ওয়েস্টে ছেলে জিশান সিদ্দিকীর অফিস থেকে বের হওয়ার পরপরই তাকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় লীলাবতী হাসপাতালে। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এদিকে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। তারা হলেন হরিয়ানার বাসিন্দা গুরমাইল বলজিত সিং (২৩) ও উত্তর প্রদেশের ধর্মরাজ রাজেশ কাশ্যপ (১৯)। তবে মূল সন্দেহভাজন শিব কুমার নামে উত্তরপ্রদেশের এক বাসিন্দা এখনো অধরা। তার খোঁজে হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশসহ অন্তত পাঁচটি ভিন্ন জায়গায় মুম্বাই পুলিশের অপরাধ শাখার সদস্যরা অভিযান চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাবা সিদ্দিকীর লাশ গতকাল রাতেই মুম্বাইয়ের মেরিন লাইনে অবস্থিত বড় কবরস্থানে সমাহিত করার কথা ছিল। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ভাড়টিয়া কিলার দিয়ে বাবা সিদ্দিকীকে খুন করা হয়েছে। হত্যাকা ঘটানোর জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে। দিন কয়েক আগে হত্যাকারীদের হাতে অস্ত্রও তুলে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের বরাতে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, খুনের আগে বেশ কয়েকবার ঘটনাস্থলে রেইকি করে গিয়েছিলেন দুর্বৃত্তরা। এর জন্য প্রত্যেক শুটারকে ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি গত প্রায় এক মাস ধরে মুম্বাইয়ের কুর্লা এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তারা বসবাস করেছিলেন। রাতে একটি অটোরিকশা করে কুর্লা থেকে ঘটনাস্থলে এসে দুর্বৃত্তরা বাবা সিদ্দিকীকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। এ ঘটনায় তার একজন ঘনিষ্ঠজনও আহত হয়েছেন।
এদিকে বাবা সিদ্দিকী হত্যাকান্ডে র ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এনসিপি প্রধান ও মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার জানিয়েছেন, এ ঘটনার সঙ্গে প্রধান সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তিনি বাবা সিদ্দিকীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে গতকাল দলের সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, মুম্বাইয়ের ‘বান্দ্রা ওয়েস্ট’ বিধানসভা কেন্দ্রের তিনবারের বিধায়ক ছিলেন বাবা সিদ্দিকী। মুম্বাইয়ের রাজনৈতিক অঙ্গনে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী নাম ছিলেন তিনি। ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী বিলাসরাও দেশমুখের মন্ত্রিসভায় খাদ্য, খাদ্য সরবরাহ এবং শ্রম দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। গত ফেব্রুয়ারি মাসে অজিত পাওয়ার গোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন এনসিপিতে যোগ দিয়েছিলেন বাবা সিদ্দিকী।