বাগেরহাটে চাষের ৩৪ দিনের মধ্যেই ফুটেছে লাল টুকটুকে নেদারল্যান্ডসের ফুল লিলিয়াম কন্দ (গাছের মূল)। জেলার মোল্লাহাট উপজেলার গারফা গ্রামের তরুণ প্রকৌশলী ফয়সাল আহম্মেদ তার খামারে প্রথমবারের মতো নেদারল্যান্ডসের লিলিয়াম ফুল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। এ ফুল দেখতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা আসছেন। লিলিয়াম ফুল বিক্রি করে ভালো লাভের আশা করছেন ফুল চাষি ফয়সাল। বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নেদারল্যান্ডসের ফুল লিলিয়াম চাষ ছড়িয়ে দেওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ। প্রকৌশলী ফয়সাল আহম্মেদ জানান, নেদারল্যান্ডসের লিলিয়াম ফুল চাষের আগ্রহ নিয়ে বীজের জন্য লাল তীর নামে একটি বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাদের মাধ্যমে জানতে পারি এ ফুলের বীজ হয় না। কন্দ (গাছের মূল) থেকেই চারা হয়ে গাছে ফুল ধরে। এরপর লাল তীরের সহযোগিতায় নেদারল্যান্ডস থেকে লিলিয়ামের ২০০টি কন্দ এনে এক শতাংশ জমিতে ৩০ অক্টোবর পরীক্ষামূলকভাবে রোপণ করি। সাধারণত দুই মাসে ফোটার কথা থাকলেও নিবিড় পরিচর্যার কারণে আমার জমিতে মাত্র ৩৪ দিনে অনেক গাছে লিলিয়াম ফুল ফুটেছে।
আশাকরি ইংরেজি নববর্ষ ও ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসে ভালো দামে এ লিলিয়াম ফুল বিক্রি করতে পারব। তিনি আরও বলেন, লিলিয়াম খুব দামি ফুল। বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইতোমধ্যে আমার লিলিয়াম ফুলের খামার দেখে অনেকেই এ ফুল চাষের উদ্যোগ নিচ্ছেন। প্রতিদিন স্থানীয়সহ দূরদূরান্তের অনেকে আসছেন আমার লিলিয়াম ফুলের খেত দেখতে। অনেকে লিলিয়াম ফুলের সঙ্গে ছবি তুলছেন। বাগেরহাটে প্রথমবার নেদারল্যান্ডসের ফুল লিলিয়াম দেখে অনেকেই উচ্ছ্বসিত। বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শংকর মজুমদার জানান. নেদারল্যান্ডস, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার শীত প্রধান দেশগুলোতে লিলিয়াম ফুলের ব্যাপক চাষ হয়ে থাকে। সাধারণ সাদা, হলুদ, কমলা, গোলাপি, লাল ও বেগুনি বর্ণের লিলিয়াম ফুল দেখা যায়। এ ফুলের বর্ণচ্ছটা অনেকটা চিত্রের মতো। দেখতে কোনো শিল্পী তার তুলি দিয়ে ফুলের গায়ে গাঢ় রঙের প্রলেপ এঁকে দিয়েছেন। এ জাতের ফুলে ছয়টি পাপড়ি থাকে, যা বেশ প্রসারিত হয়। বিশ্বব্যাপী অভিজাত পরিবারে এ ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বেশকিছু ওষুধিগুণও রয়েছে এ ফুলের। লিলিয়াম ফুল বর্ণ বৈচিত্র্য ও সুন্দর আকারের কারণে বাংলাদেশেও এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমদানি করা প্রতিটি ফুল ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়।