স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের নয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। সারাদেশের মতো এসব ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের।
কিন্তু পলাতক এসব চেয়ারম্যানরা পরিষদে না আসলেও এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করে আদেশটি স্থগিতাদেশ নিয়ে। ফলে পরিষদ থেকে নাগরিক সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা। ইতমধ্যে জনগণকে ভোগান্তি থেকে মুক্ত করার জন্য সোচ্চার হয়ে উঠেছে স্থানীয় সচেতন মানুষ।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অন্তর্বতীকালীন সরকার ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) আদেশ দেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা হাইকোর্টে রিট করে আমাদের আদেশ স্থগিত করে। পরে জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আমরা সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছি।
এদিকে পলাতক চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতিতে নাগরিক সেবা নিশ্চিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্থানীয়রা। তাদের দাবি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পালিয়ে গেছেন। পরিষদে না আসায় জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত সেবা নিশ্চিত এবং এ চেয়ারম্যানদেরকে গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে পলাতক বা জেলহাজতে থাকা চেয়ারম্যানদের স্থলে অস্থায়ী প্রশাসক প্রতিনিধি নিয়োগ করে ইউনিয়নের কাজ চালু করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর অবৈধ চেয়ারম্যানরা নিজেদের অপকর্মের কারণে পালিয়ে থেকে জনগণকে সেবা থেকে বঞ্চিত করেছে। জনগণ কোনো সেবা পাচ্ছে না- জন্ম-মৃত্যু সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারিশ সনদ, প্রত্যয়নপত্র, সরকারি ভাতার যাচাই-বাছাই বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় উন্নয়ন প্রকল্প, রাস্তাঘাট মেরামত, ত্রাণ বিতরণ, ভিজিডি/ভিজিএফ কার্ড বিতরণ সব অচল হয়ে পড়েছে।
গরীব মানুষ, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতা প্রার্থী- সবার ন্যায্য অধিকার থমকে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে জনগণ তালা ঝুলতে দেখে ফিরে আসছে। যাদের জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেনি কিন্তু ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুঃশাসন শাসনের আমলে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান পদ দখল করার কারণে তারা নিজেরাই জনগণকে ফেলে পালিয়েছে। কিছুদিন আগে তারা পরিষদে আসার জন্য আদালতে রিট করে।
আদালত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ রিটকারী চেয়ারম্যানদের পরিষদের আসার নির্দেশ দেওয়ার পরও কোন চেয়ারম্যান অফিসে এসে দায়িত্ব পালন করেনি। অথচ তাদের করা রিটের কারণে প্রশাসনিক বিকল্প ব্যবস্থাও আদালতের নির্দেশে এখন বন্ধ। জনগণ বিভিন্ন ধরনের সেবা থাকে বঞ্চিত।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম