বাংলা শিশুসাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, সুকুমার রায় ও ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের ময়মনসিংহের বাড়ি ভাঙা হচ্ছে। বাড়িটি শহরের হরিকিশোর রায় রোডে অবস্থিত। ইতোমধ্যে স্থাপনাটি ভাঙার বিষয়ে কাগজপত্র চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। এমন খবরে নেটিজেনরা বিরূপ মন্তব্য করছেন সমাজমাধ্যমগুলোয়। জীর্ণ এ ভবনটি শিশু একাডেমী ব্যবহার করত। ২০০৭ সালের পর থেকে আর কোনো কার্যক্রম চালানো যায়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ শিশু একাডেমীর জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা মো. মেহেদী জামান বলেন, ‘বাড়িটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় ভাড়া বাসায় একাডেমীর কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সব প্রক্রিয়া মেনে স্থাপনাটি ভাঙা হচ্ছে। এখানে আপাতত একটি আধাপাকা এবং পরে পাঁচ তলা স্থাপনা হবে। স্থাপনাটি রেখে কোনোভাবে করার সুযোগ ছিল না।’
জানা গেছে, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের শশীলজ জাদুঘরের মাঠ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন বাড়িটি ভাঙা সম্পর্কে তথ্য চেয়ে সোমবার জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের জরিপে এসব স্থাপনা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারে। সে কারণে বাড়িটি ভাঙা সম্পর্কে শিশু একাডেমীর কাছে তথ্য চেয়ে আবেদন করেছি। শতবর্ষী স্থাপনা হিসেবে আমরা চাই বাড়িটি রক্ষা পাক।’ প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষক-লেখক স্বপন ধর জানান, বাড়িটি কয়েকবার হাতবদল হয়েছে। এটি সর্বশেষ প্রখ্যাত সমাজসেবী রণদা প্রসাদ সাহা কিনে নিয়েছিলেন। স্থাপত্যশৈলী দেখে বোঝা যায়, ভবনটি ১৭৮৭ সালের পর গড়ে ওঠে।
তিনি আরও জানান, ‘মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজা শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী তাঁর সমমনা হিতাকাক্সক্ষীদের নিজের কাছাকাছি নিয়ে আসেন। তাঁদের মধ্যে ছিল হরিকিশোরদের পরিবার। ভবনটির পাশেই হরিকিশোরের ভবন আছে। যেহেতু ভবনটি পাশাপাশি, ধারণা করছি এটিও তাঁদেরই বংশধরদের কারও।’