দেশ কিংবা দেশের বাইরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এর আগে কখনও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। অবশেষে সেই আক্ষেপ ঘুচলো। লঙ্কানদের তাদেরই মাটিতে সিরিজ হারিয়ে ইতিহাস গড়লো লিটন দাসের দল।
বুধবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩২ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেছেন পাথুম নিশাঙ্কা। বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট নেন শেখ মেহেদি। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন শরিফুল, মুস্তাফিজুর ও শামীম।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারে উইকেট হারায় শ্রীলংকা। পেস বোলার শরিফুল ইসলামের বলে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন লংকান ওপেনার কুশাল মেন্ডিস।
এরপর শ্রীলংকা শিবিরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান। ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের পরিবর্তে সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেন মেহেদি।
ইনিংসের দ্বিতীয়, পঞ্চম, অষ্টম ও ১১তম ওভারে বল করতে এসে একের পর এক উইকেট তুলে নেন মেহেদি। নিজের করা প্রথম তিন ওভারে মেহেদি সাজঘরে ফেরান শ্রীলংকার তিন অধিনায়ককে।
প্রথমে আউট করেন সাবেক অধিনায়ক কুশাল পেরেরাকে। এরপর আউট করেন তিন বছর পর দলে ফেরা শ্রীলংকার সাবেক আরেক অধিনায়ক দীনেশ চান্দিমালকে। নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন শ্রীলংকার বর্তমান অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কাকে।
৩ ওভার শেষে ১১ রানে মেহেদি শিকার করেন ৩ উইকেট। এরপর ১১তম ওভারে আউট করেন পাথুম নিশাঙ্কাকে। তিনি ইনিংসের শুরু থেকে উইকেটের এক প্রান্ত আগলে ছিলেন। মেহেদির বলে পরিস্কার বোল্ড হয়ে ফেরেন নিশাঙ্কা। তার আগে ৩৯ বলে চার বাউন্ডারির সাহায্যে দলীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রান করার সুযোগ পান লংকান এই ওপেনার।
দলীয় ৬৬ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন পাথুম নিশাঙ্কা। দলীয় ৮৮ রানে শামিম পাটোয়ারীর বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন কামিন্দু মেন্ডিস। দলীয় ১০৩ রানে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন জাফরি ভেন্ডারসি।
শেষ দিকে সাবেক অধিনায়ক দাসুন শানাকার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৩২ রান তুলে শ্রীলংকা। ২৫ বলে চারটি চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন শানাকা।
১৩৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। গোল্ডেন ডাক খেয়ে সাজঘরে ফেরেন পারভেজ হোসেন ইমন। তাতে শুরুতেই বিপাকে পড়ে টাইগাররা। তবে তিনে নেমে সেই বিপদ সামাল দিয়েছেন লিটন।
রানের খাতা খুলার আগেই উইকেট হারানো বাংলাদেশকে টেনে তুলেছেন লিটন দাস ও তানজিদ তামিম। এই দুজনের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৭৪ রান তুলে বাংলাদেশ। তিনে নেমে ২৬ বলে ৩২ রান করেছেন অধিনায়ক।
এরপরের গল্পটা শুধুই তানজিদ তামিমের। এই ওপেনার এক প্রান্তে রীতিমতো ঝড় তোলেন। ২৭ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি। শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে এক চার আর ৬টি ছক্কার সাহায্যে ৭৩ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন তাওহিদ হৃদয়। এই মিডল অর্ডার ব্যাটার অপরাজিত ছিলেন ২৫ বলে ২৭ রান করে। এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম