ক্যামেরুনের বিরোধী দলীয় নেতা ইসা চিকরোমা বাকারি দেশটিতে বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর নিরাপত্তার কারণে পালিয়ে গাম্বিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। সম্প্রতি ঘোষিত ফলাফলে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা পল বায়া আবারও জয়ী হওয়ার পর দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে তিনি দেশ ছাড়েন।
রবিবার এক বিবৃতিতে গাম্বিয়া সরকার জানায়, মানবিক কারণে দেশটি সাময়িকভাবে চিকরোমাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং ক্যামেরুনের উত্তেজনা কমাতে আঞ্চলিকভাবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে। বিবৃতিটি গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আদামা ব্যারোর কার্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, নাইজেরিয়া ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্যামেরুনে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে।
অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের সরকারি ফল অনুযায়ী ৯২ বছর বয়সী পল বায়া তাঁর অষ্টম মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরেছেন। তিনি ৫৩.৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বলে নির্বাচনী কমিশন জানিয়েছে। অন্যদিকে চিকরোমা পেয়েছেন ৩৫.২ শতাংশ। সাবেক এই মন্ত্রী, যিনি ক্যামেরুন ন্যাশনাল স্যালভেশন ফ্রন্টের নেতৃত্ব দেন, অভিযোগ করেছেন যে ফল জালিয়াতি করা হয়েছে এবং প্রকৃত বিজয়ী তিনিই। তাঁর ভাষায়, ‘এটা গণতন্ত্র নয়, এটা এক ধরনের নির্বাচনী চুরি। একেবারে প্রকাশ্য সাংবিধানিক অভ্যুত্থান।’
ভোটের পর থেকেই তিনি সমর্থকদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানাচ্ছেন। তাঁর ‘ডেড সিটি’ কর্মসূচিতে দোকান বন্ধ রাখা ও জনসমাগম এড়িয়ে প্রতিবাদ জানানোর ডাক দেওয়া হয়। এ সময় দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ক্যামেরুন সরকার জানিয়েছে, অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে। তবে বিরোধী শিবির এবং কয়েকটি সিভিল সোসাইটি সংগঠন বলছে, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।
চিকরোমার এসব আহ্বানকে কেন্দ্র করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ উসকানি’সহ বিভিন্ন অভিযোগে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে সরকার।
১৯৮২ সালে ক্যামেরুনের প্রথম প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের পর ক্ষমতায় আসেন পল বায়া। ২০০৮ সালে সংবিধান থেকে মেয়াদসীমা তুলে দেওয়ার পর থেকে তিনি টানা ক্ষমতায় আছেন। সমালোচকরা বলেন, রাজনৈতিক বিরোধিতা দমন করে কঠোরভাবে দেশ চালিয়ে আসছেন তিনি।
সূত্র: আল-জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/আশিক