ঘরোয়া ফুটবলে নতুন মৌসুমে দলবদল চলছে। ১ জুন থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে তা শেষ হবে। অথচ এখনো ঘর গোছাতে পারেনি দেশের জনপ্রিয় দুই ক্লাব মোহামেডান ও আবাহনী। গেল লিগে একদল চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হয়েছিল। আসছে মৌসুমে শক্তি বাড়ানো তো দূরের কথা পুরোনোদের রাখতেই হিমশিম খাচ্ছে দুই জায়ান্ট। কী করবে কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না। বাংলাদেশের ফুটবলে দুটি দলই বরাবরই শক্তিশালী দল গড়ত। পেশাদার লিগের প্রথম তিন আসরের পর মোহামেডান ভালোমানের দল গড়তে পারেনি। ফুটবলারদের পারিশ্রমিক পরিশোধ না করায় ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের দলবদল কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফা।
আবাহনী বিগ বাজেটের দল গড়েই যাচ্ছিল। এবার নতুন মৌসুমে আবাহনীও চোখে শর্ষে ফুল দেখছে। গেল মৌসুমে পেশাদার লিগে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছিল মোহামেডান আর পিছু হটবে না। আগের চেনা চেহারায় ফিরবে। না, অর্থ সংকট এতটা তীব্র যে তারকানির্ভর দল গড়ার চিন্তা বাদ দিয়েছেন কর্মকর্তারা। পুরোনোদের ধরে রাখাটাই চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। যার নেতৃত্বে এবার ২৩ বছর পর মোহামেডান লিগ জিতেছে সেই সুলেমান দিয়াবাতেকে রাখতে পারছে না। জানা গেছে, মালির এ স্ট্রাইকার যে পারিশ্রমিক দাবি করেছেন তা মোহামেডানের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয় বলে আগেই না করে দিয়েছে। নতুন কাউকে নেবে তাও সম্ভব হচ্ছে না। কেননা অর্থ পাবে কোথায়? ক্লাব থেকে বলা হচ্ছে পুরোনোদের সব বকেয়া শোধ করা হয়েছে। বাস্তবে নাকি তা হয়নি। এখনো নাকি ৫০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। আগের অর্থই যেখানে দিতে পারছে না। সেখানে নতুন শক্তিশালী দল গড়বে কীভাবে? যারা অর্থ দিতেন তারাও নাকি নীরব রয়েছে। সবমিলিয়ে ঐতিহ্যবাহী দলের নাজুক অবস্থা বলা যায়।
১৯৭২ সালে অভিষেকের পর আবাহনীতে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে। দল গড়ার পর্যাপ্ত ফান্ড নেই। অবশ্য এর পেছনে কী কারণ তা কারোর অজানা নয়। রীতিমতো চোখে শর্ষে ফুল দেখছে। পুরোনোদের ধরে রাখাটা মুশকিল হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে গোলরক্ষক মিতুল মারমা, মো. হৃদয় ও শাহরিয়ার ইমন নাকি নতুন ঠিকানায় নাম লিখিয়েছেন। নতুন মৌসুমে দলের চেহারা কেমন হয় তা নিয়েই হতাশায় বসে আছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে অতিথি খেলোয়াড় নেবে সেই অর্থও নাকি নেই। শুধু মোহামেডান ও আবাহনী নয়, এবার সব ক্লাবই অর্থ সংকটে জর্জরিত। সহযোগিতা করতে কেউ এগিয়ে আসছেন না। তাহলে শক্তিশালী দল গড়ছে কারা? এতে ঘরোয়া ফুটবলে কি ধস নামবে? এ নিয়ে প্রতিটি ক্লাবই চিন্তিত।