নরসিংদীতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীদের ছুরিকাঘাতে আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মী জুনায়েদ আল হাবিব (২২) মারা গেছেন। ছুরিকাঘাতের নয় দিন পর সোমবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গতকাল সকাল থেকে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা রাস্তায় নেমে আসেন। পরে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মরজাল বাসস্ট্যান্ডে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং অবরোধ করে রাখেন। একপর্যায়ে উত্তেজিতরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী বাদলের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জুনায়েদ রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের বটিয়ারার মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে ও স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষার্থী।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, ২৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার বটিয়ারা মোড়ে জুনায়েদকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা স্বাধীন ও পিয়ালের নেতৃত্বে কয়েকজন ছুরিকাঘাত করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। টানা নয় দিন সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার দুপুরে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে আইসিইউ খালি না থাকায় তাকে রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ভর্তির প্রস্তুতিকালে সোমবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ৩০ সেপ্টেম্বর জুনায়েদের চাচা মো. শফিক বাদী হয়ে স্বাধীন ও পিয়ালসহ ১৪ জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে। পরিবারের দাবি, ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় স্থানীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীরা জুনায়েদকে ছুরিকাঘাত করে। রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল জব্বার জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এর জেরে প্রতিপক্ষ জুনায়েদ আল হাবিবকে ছুরিকাঘাত করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ খবরে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।