৩০ মে, ২০২৩ ১৫:২৬

প্রমত্তা পাগলার বুকে এখন সোনালি ধান!

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রমত্তা পাগলার বুকে এখন সোনালি ধান!

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জে এককালের প্রমত্তা পাগলা নদীর বুকজুড়ে চাষ করা হচ্ছে ধান। সোনালি ধানের ভরে উঠেছে নদী বক্ষ। ধান ক্ষেতের এমন মায়াময় দৃশ্যে চোখ জুড়ালেও পাগলা নদী দিনে দিনে বিলীন হতে চলেছে। যা সুফলের চেয়ে কুফলই ডেকে আনছে বেশি।

এদিকে কালের আবর্তে শিবগঞ্জের এক সময়ের প্রবল খরস্রোতা পাগলা নদী এখন কেবল কালের স্বাক্ষী। নদীর বুকজুড়ে এখন ধানসহ বিভিন্ন ফসলের সমারোহ। জানা গেছে, পাগলা নদীর একটি উপশাখা যা চকের নদী নামে পরিচিত। এ নদীটি ছিল শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা, বিনোদপুর ও দূর্লভপুর ইউনিয়নজুড়ে। নদী তীরবর্তী এলাকার বৃদ্ধ কয়েকজন ব্যক্তির মতে, এ নদীটি প্রায়দুু’শত বছর আগের। এ নদী ঘিরে বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকা বিওপি, মনাকষা ইউনিয়নের মনাকষা হাট, আদিনা সরকারি কলেজ, হুমায়ুন রেজা উচ্চ বিদ্যালয়, মনাকষা শশ্মান, দাদনচক হাট, মনাকষা বিওপি, দাদনচক হাট, দাদনচক পিটিআই, নীলকুঠির কারখানা, দূর্লভপুর ইউনিয়নের তর্তিপুর মহাশ্মশান, তর্তিপুর মেলা ও তর্তিপুর ঘাটসহ ছোট বড় বিভিন্ন ধরণের শতাধিক স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এ নদীর তীর ঘেঁষে মনাকষা ইউনিয়নের খড়িয়াল ও পারচৌকা গ্রামের সামনে বৃটিশ সরকার এক সময় বিরাট এলাকা জুড়ে নীলকুঠি তৈরি করে এলাকার হাজারো কৃষককে বিনা পারিশ্রমিকে নীল চাষে বাধ্য করেছিল। নীল চাষে কৃষকরা অনাগ্রহ দেখালে সহ্য করতে হতো কঠিন নির্যাতন। সরেজমিনে ঘুরে এলাকার বৃদ্ধ ব্যক্তিরা জানান, এ চকের নদীতে আগে বড় বড় নৌকা ছিল একমাত্র বাহন। পাঁচশ' মণী নৌকাযোগে দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসা করতে আসতো বিভিন্ন ধরণের ব্যবসায়ীরা।

এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ৩০ কিলোমিটর দীর্ঘ এ নদীটি চৌকা বিওপির অধীনস্ত সীমান্ত এলাকা হয়ে ভারত থেকে বয়ে এসে তর্তিপুর ঘাট পার হয়ে মহান্দা নদীতে মিশেছে। এ নদীর উপর দিয়ে বর্তমানে ৫-৬টি ব্রিজ রয়েছে। আছে নদীর জমি আত্মস্মাৎ ও দখলের অভিযোগও।

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জুবায়ের হোসেন বলেন, বর্তমানে খাস ও নদীর জমি দখলমুক্ত করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে সকল খাস জমি ও নদীর জমি দখলমুক্ত করে সরকারের নিয়ন্ত্রণে এনে জনস্বার্থে ব্যবহার করা হবে বলেও জানান তিনি।

 


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

সর্বশেষ খবর