পড়ালেখার পাশাপাশি সাহসী উদ্যোগ নিয়েছেন কলেজশিক্ষার্থী মো. জোবায়ের হোসেন ওরফে পরান। নদীর তীরে নিজের মেধা আর শ্রম দিয়ে খাঁকি ক্যাম্বেল ও জিং ডিং জাতের হাঁস পালন করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন তিনি। ছোট পরিসরে শুরু করলেও ভালো লাভ হওয়ায় ভবিষ্যতে আরও বড় করার ইচ্ছা আছে তার। ২০২৫ সালের ২৪ মার্চ নিজে কিছু করার অভিপ্রায়ে তিনি ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় পাঁচ শতক জমি ভাড়া নেন। ১ হাজার ২০০টি এক দিন বয়সি হাঁসের বাচ্চা এনে খামার শুরু করেন। শুরুতে খামার পরিচালনায় অনেক কষ্ট হলেও তিনি হার মানেননি।
পরে কিছু হাঁস বিক্রি করে দিয়ে সাড়ে ৪০০ খাঁকি ক্যাম্বেল ও জিং ডিং জাতের হাঁস পালন করে সফলতার দেখা পেয়েছেন। বর্তমানে তাঁর খামারের সাড়ে ৩০০ হাঁস প্রতিদিন ডিম দিচ্ছে। প্রতিদিন হাঁসগুলোর খাবার, ওষুধ ও যত্নে খরচ হয় প্রায় ২ হাজার ৫০০ টাকা। তবে প্রতিদিনের খরচ বাদ দিয়েও তিনি লাভবান হচ্ছেন। প্রতিটি ডিম পাইকাররা খামার থেকেই ১৩ থেকে ১৪ টাকা দরে কিনে নিয়ে যান। পরান ২০১৯ সালে এসএসসি পাস করেন। বর্তমানে বিরামপুর সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগে অধ্যয়নরত। পরানের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে আশপাশের অনেক তরুণও হাঁসের খামার গড়ে তুলেছেন। এখন নদী তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছে একাধিক ছোট-বড় হাঁসের খামার।
স্থানীয়রা জানান, জোবায়ের হোসেন ওরফে পরানের এ সফলতা স্থানীয় তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণার নাম। অনেকে তাঁর খামার দেখতে আসেন, পরামর্শ নেন, কেউ কেউ নতুন খামার শুরু করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। বেলাল সরকার, ফারুক আহমেদ, সুজন মিয়া ও মশিউর রহমানসহ কয়েকজন যুবক এখন হাঁসের খামার করে ভালো আয় করছেন।
মো. জোবায়ের হোসেন ওরফে পরান জানান, আমি খামারে সময় দিই প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত। খাবার তৈরি থেকে শুরু করে হাঁসের যত্ন, ডিম সংগ্রহ সব কিছু আমি নিজেই করি। এই খামার শুরু করতে মোট ৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি।
বিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপুল কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘শীতকালে হাঁসের ডিমের চাহিদা বেড়ে যায়। হাঁসের ডিমে উচ্চমানের প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম থাকে যা পুষ্টিকর ও আমিষসমৃদ্ধ। বর্তমানে খামারিরা এসব ডিম স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বিভিন্ন হ্যাচারিতে সরবরাহ করছেন। একদিকে স্থানীয় চাহিদা পূরণ, অন্যদিকে দেশের নানা প্রান্তে ডিম রপ্তানি করে খামারিরা লাভবান হচ্ছেন।’
বিডি প্রতিদিন/এমআই