ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র জালিয়াতির পর এবার ভর্তি জালিয়াত চক্রের ফাঁদে পড়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ও। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাছাড়া চট্টগ্রামে ভর্তি জালিয়াতির কারণে ছাত্রলীগের নেতাসহ দুইজনকেই বহিস্কার করেছে চবি কর্তৃপক্ষ।
চবির প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভর্তি জালিয়াতি চক্রে জড়িত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সহ-সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের ব্যবহৃত হওয়া ডিভাইসসহ কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর চকবাজারের বাদুরতলা এলাকার একটি বাসা থেকে তাদের আটক করা হয়। তিনি চবি ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার সঙ্গে আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তার পরিচয় প্রকাশ করেনি বলে জানান বায়েজিদ বোস্তামী থানার পরিদর্শক আবছার উদ্দিন রুবেল।
তিনি বলেন, আটক ইশতিয়াক আহমেদের কাছে দুটি ডিভাইসসহ বেশ কয়েকটি ব্যাটারি পাওয়া গেছে। তার সঙ্গে আরও একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে ঢাবির ওই চক্রের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই চক্রের আরও বেশ কয়েকজন রয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো.আলী আজগর চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জালিয়াতিতে জড়িত থাকায় ছাত্রলীগের এক নেতাসহ দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিজস্ব ক্ষমতাবলে এই দুজনকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃতরা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ সৌরভ ও ইংরেজি বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শরিফুল ইসলাম নাজমুল।
তিনি আরও বলেন, দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ভর্তি জালিয়াতিতে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তাছাড়া তাদেরকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হাবিবুর রহমান তারেক ক্ষোভের সাথে বলেন, এসব চিহ্নিত নেতাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। যারা শিক্ষাকে বিপর্যয়ের পথে নিয়ে যেতে এসব অপর্কমগুলো করে যাচ্ছে। দুয়েকজন ছাত্রলীগের কারণে আজ ঐতিহ্যবাহি ছাত্রলীগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে। দ্রুত কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা এসব সমস্যার সমাধান করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সরকার এবং আওয়ামীলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি চক্র এসব কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘ঘ’ ইউনিটের ইংরেজি অংশের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল। এ প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় পরীক্ষায় ব্যবহারের বিশেষ কমিউনিকেশন ডিভাইসসহ প্রশ্নের ‘সমাধান দেয়া চক্রের’ দু’জন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন রানাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর