শারীরিক প্রতিবন্ধী জুবায়ের হোসেন উজ্জ্বলের (২১) উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার জন্য ভর্তি পরীক্ষার যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। শনিবার রংপুর নগরীর ক্যান্টপাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে অনুষ্ঠিত গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। উজ্জ্বলের বাবা কৃষক জাহিদ সারোয়ার মিঠাপুকুর থেকে সন্তানকে এ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে নিয়ে এসেছিলেন। আলাদা কক্ষে বেঞ্চে শুয়ে নির্ধারিত সময়ে মুখ দিয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন উজ্জ্বল। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় দিয়ে সামান্য স্কোরের কারণে তিনি সুযোগ পাননি। গত ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যায়ের পরীক্ষায়ও উজ্জ্বল অংশ নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার প্রত্যাশা তার।
রংপুর মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম হযরতপুরের হতদরিদ্র কৃষক জাহিদ সারোয়ারের তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় জুবায়ের হোসেন উজ্জ্বলের (২১) শারীরিক প্রতিবন্ধীতা জন্মের পর থেকে। নিজ বিছনাকে শ্রেণি কক্ষ বানিয়ে উজ্জ্বল দিন-রাত মুখ দিয়ে বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টিয়ে বই পড়েন। তিনি স্থানীয় শেরপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে জিপি ৪ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট অর্জন করেন। এরপর বালারহাট আদর্শ ডিগ্রী মহাবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় তিনি জিপিএ- ৪ দশমিক ৫৮ অর্জন করেছেন।
উজ্জ্বল বলেন, আমার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছে। আমি চেষ্টা করে যাব উচ্চ শিক্ষার জন্য। উজ্জ্বলের বাবা জাহিদ সারোয়ার বলেন, আমার ছেলে হাটতে, বসতে পারে না। তার হাত-পা অকেজো। এরপরেও সে উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে। আমি পারিবারিক-অর্থনৈতিক নানা সংকটের মধ্যেও ছেলের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি। উজ্জ্বলের স্বপ্ন সে লেখাপড়া করে একটি সরকারি চাকরি করবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল