চট্টগ্রামে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের বাড়ি রক্ষায় মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক সংগঠন ও বাড়িটির বর্তমান দখলদার নানা কর্মসূচি পালন করেছে। ইতোমধ্যে আদালত ভবনটি ভাঙার ওপর এক মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
জানা যায়, গত সোমবার ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের বাড়ি ভাঙতে গেলে বাধা দেন অ্যাড. রানা দাশগুপ্ত। পরদিন মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ‘চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রহমতগঞ্জ এলাকার যাত্রামোহন সেনগুপ্তের বাড়িটি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত। এখানে অবস্থান করেছিলেন মহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, মৌলানা শওকত আলী, ড. আনসারী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ রসুল।
এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বতর্মানে বাড়িটির দখলদার ফরিদ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ফরহাদ চৌধুরী রিয়েল। এ সময় ফরহাদ চৌধুরী রিয়েল বলেন, ‘আমি আইনগতভাবে এই জায়গা পেয়েছি। সেখানে আমি স্থিতি থাকব। যদি সরকার মনে করে- আমাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জায়গাটি নেবে। তাহলে আমরা অবশ্যই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা হস্তান্তর করব। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
তাছাড়া ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি রক্ষার দাবিতে বিকালে চট্টগ্রাম নগরের চেরাগি পাহাড় মোড়ে মানববন্ধন ও নাগরিক সমাবেশ করে বিপ্লব ও বিপ্লবীদের স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ। এতে বক্তব্য রাখেন নাগরিক সংগঠক অধ্যাপক হোসাইন কবীর, রাশেদ হাসান, শরীফ চৌহান, সুনীল ধর, আতিকুর রহমান, প্রীতম দাস প্রমুখ।
জানা যায়, সর্বভারতীয় কংগ্রেসের নেতা যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত ১৯৩৩ সালের ২৩ জুলাই নিঃসন্তান অবস্থায় ব্রিটিশ ভারতের করাচিতে কারাবন্দি অবস্থায় মারা যান, তার কোনো ওয়ারিশ কর্তৃক এই বাড়ি বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের স্ত্রী নেলি সেনগুপ্ত ১৯৭০ সাল পর্যন্ত রহমতগঞ্জ এলাকার বাড়িটিতে ছিলেন। ওই বছর তিনি ভারতের কংগ্রেস সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আমন্ত্রণে চিকিৎসার জন্য সেখানে যান। এর মধ্যে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এরপর তিনি ভারতে চলে গেলে পাকিস্তান সরকার সেটিকে শক্রু সম্পত্তি ঘোষণা করে। পরে ১৯৭৫ সালে সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে সেই বাড়িতে ‘শিশুবাগ’ নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন শামসুদ্দিন মো. ইছহাক। এরপর থেকে তার সন্তানরা সেটি পরিচালনা করে আসছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন