করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার আবারো এক সপ্তাহের লক ডাউন ঘোষণা করেছে। সোমবার থেকে এই লকডাউন কার্যকর হবে। আর এই ঘোষণা আসার পরপরই নানা আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম নগরীতে বাসরত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকেরাই বেশি ভুগছেন লকডাউন আতঙ্কে।
নগরীতে যারা দিনমজুরী কাজ করেন এবং ছোট চাকরী নিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করেন, তারা লকডাউন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। আতঙ্কের কারণে নগরীর আশপাশের উপজেলা আনোয়ারা, পটিয়া, বাঁশখালী, হাটহাজারী, বোয়ালখালী, রাঙ্গুনিয়া, সীতাকুণ্ড এলাকার অনেককেই পরিবার নিয়ে শনিবার বিকেল থেকে নগরী ছাড়তে দেখা গেছে। আবার কেউ কেউ আয়-রোজগারের চিন্তায় মানসিক কষ্টে ভুগছেন, অনেককে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের প্রতিযোগিতায় নামতেও দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, শনিবার দুপুরে নগরীর বহদ্দারহাট মোড়, শাহ আমানত সেতু চত্বর, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইটসহ নগরীর প্রবেশমুখ গুলোতে শহর ছেড়ে নিজেদের গ্রামের বাড়িতে যাওয়া অনেক লোকজনকে দেখা গেছে। পরিবার নিয়ে আপাতত নগর ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছেন এমনই একজন পটিয়ার হাবিলাশদ্বীপ এলাকার কফিল উদ্দিন। তিনি নগরীর আদালত পাড়ায় কম্পিউটার, ফটোস্টেট ও হালকা স্টেশনারী দোকানের মালিক।
আলাপকালে তিনি জানান, এক সপ্তাহের লকডাউন হলেও এই লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়তে পারে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে এখানে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। এতে পরিবার নিয়ে অর্থকষ্টে পড়ার আগেই তাদের নিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছি।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে নতুন করে ৪৬৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে। শনিবার সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবসহ চট্টগ্রামে ৭টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে নগরে ৩৮৫ জন এবং উপজেলায় ৮২ জন।
এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ হাজার ২৬৮ জন এবং মোট মৃত্যু ৩৮৯ জন। করোনার এই ঊর্ধ্বমুখীর কারণে সোমবার থেকে পুরোপুরি লকডাউন দিয়েছে সরকার।
দেশব্যাপী দ্বিতীয়বারের মতো লকডাউন ঘোষণার কারণে নগরবাসীর কাছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় ও মজুদ না করার পরামর্শ দিয়ে কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন বলেন, লকডাউন হলেও কাঁচাবাজার এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানপাট খোলা থাকবে।
ফলে এতে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজন অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় করে অনেকেই ভুল করেন এবং শেষে গিয়ে দেখা যায় অনেক পণ্য নষ্ট হয়ে যায়।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর