চট্টগ্রামে গত সোমবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৯৪ জন, গত মঙ্গলবার বেড়ে এ সংখ্যা হয় ১২০ জন এবং বুধবার মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১৯ জন। চট্টগ্রামে ক্রমান্বয়ে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। রাজধানী ঢাকার পর চট্টগ্রামেও ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তবে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ডায়রিয়া মোকাবিলায় চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মোট ভর্তি হয়েছেন ১০৭ জন। তাছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতলে ভর্তি আছেন ৭ জন এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন পাঁচজন। জেনারেল হাসপাতালে বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন দুইজন। তবে শহরের তুলনায় উপজেলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর গ্রীষ্ম মৌসুমে সাধারণত ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যায়। ফলে রোগীও বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ১০৭ জন রোগী আক্রান্ত হয়েছেন। তারা স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ২৮৪ জনের টিম গঠন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. রূপা দত্ত বলেন, এখন চলছে গরম মৌসুম। এ মৌসুমে খাবার বদ হজম হয়। তাছাড়া অনেকেরই বাইরের খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেশি। তাই এখন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ছে। এ ব্যাপারে সবাইকে খাবার গ্রহণে সতর্ক থাকা জরুরি।
চমেক হাসপাতালের সহকারি পরিচালক (প্রশাসন) ডা. রাজিব পালিত বলেন, চমেক হাসপাতালে বর্তমানে সাতজন রোগী ভর্তি আছে। তবে রোগীর চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া আছে।
জানা যায়, ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসায় চট্টগ্রামের প্রধান সেবা কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি ঠেকাতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাঁচটি ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। একই সঙ্গে ডায়রিয়া সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রি মজুদ রাখার নির্দেশনাও দেয়া হয়। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ১১ নং ওয়ার্ডে চলছে এ রোগীর চিকিৎসা। চমেক হাসপাতালের তিনটি মেডিসিন ওয়ার্ডে আছে প্রয়োজনীয় শয্যা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মনে করেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে খাবারে দ্রুত জীবাণু জন্ম নিতে পারে। গরমে রাস্তার পাশে খোলা খাবার, লেবুর শরবত খাওয়ার ফলে প্রাপ্তবয়স্করা ডায়রিয়ার আক্রান্ত হচ্ছেন। সাধারণভাবেই প্রাস্তবয়স্কদের মধ্যে যে ডায়রিয়া হচ্ছে তার প্রধান কারণ কলেরা এবং ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া। এগুলো দূষিত পানি ও পচা-বাসি খাবার থেকে ছড়ায়। তবে শিশুদের ডায়রিয়া হয় রোটাভাইরাসের কারণে। এছাড়া শিগেলা ব্যাকটেরিয়াও একটি কারণ।
বিডি প্রতিদিন/এএম