চট্টগ্রামে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ১৯১ জন। এর মধ্যে ১৫ উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছে ১২৮ জন। বাকি ৬৩ জন চট্টগ্রাম নগর এলাকার। ফলে ডায়রিয়া গ্রাম পর্যায়েই বেশি চোখ রাঙাচ্ছে। তবে এখনো উপজেলায় আক্রান্তদের উপজেলায়ই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা সুস্থও হচ্ছেন।
জানা যায়, চট্টগ্রামে ১৫টি উপজেলায় শুক্রবার পর্যন্ত মোট ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২৮ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে পটিয়ায় এবং কম আক্রান্ত হয়েছে রাউজানে। তবে শুক্রবার চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৫৪ জন। অন্যদিকে আজ পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতলে ভর্তি আছে ৮ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঁচজন এবং বেসরকারি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছে প্রায় ৫০ জন। আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে শহর এলাকার চেয়ে উপজেলা পর্যায়ে ডায়রিয়া আক্রান্তের হার কিছুটা বেশি। তবে তা এখনো নিয়ন্ত্রণে আছে। তাছাড়া ইতোমধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৪ জন। তবে সামগ্রিক বিষয়ে আমাদের প্রস্তুতি আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ২৮৪ জনের টিম গঠন করা হয়েছে। ভয়ের কোনো কারণ নেই।
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. হাসানুল করিম বলেন, ডায়রিয়া পানিবাহিত একটি রোগ। সাধারণ শহরের মানুষ ফুটানো পানি কিংবা ফিল্টার করা পানি পান করে থাকেন। কিন্তু এর বিপরীতে গ্রাম পর্যায়ের তৃণমূলের অধিকাংশ মানুষই ফুটানো পানি বা ফিল্টার পানি পান করেন না। গ্রামের কিছু মানুষ টিউবওয়েলের পানি পান করলেও এখনো অনেক মানুষ খোলা পুকুরের পানি পান করছেন। কিন্তু এসব পানি জীবাণুমুক্ত নয়। ফলে এ পানি থেকে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে। তারা বিশুদ্ধ পানি কম খাচ্ছে। তাই সবার উচিত হবে বাইরের অপরিষ্কার খাবার, রাস্তা-ঘাটের শরবত না খাওয়া। পরিষ্কার ফুটানো পানি কিংবা ফিটকিরি দিয়ে পানি পান করা। একই সঙ্গে স্যানিটেশন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে মেনটেইন করতে হবে।
জানা যায়, ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসায় চট্টগ্রামের প্রধান সেবা কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি ঠেকাতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাঁচটি ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। একই সঙ্গে ডায়রিয়া সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী মজুদ রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ১১ নং ওয়ার্ডে চলছে এ রোগের চিকিৎসা। চমেক হাসপাতালের তিনটি মেডিসিন ওয়ার্ডে আছে প্রয়োজনীয় শয্যা।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ