স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, জরায়ু ক্যান্সার রোধে কার্যকরী এইচপিভি টিকা নিয়ে নানা রকম অপপ্রচার চলছে, নানা কথাবার্তা হয়েছে। আমি মনে করি অপপ্রচার সবসময় থাকে। এক সময় আমরা যখন ফ্যামিলি প্ল্যানিং নিয়ে কাজ করেছি, ডায়রিয়া নিয়ে কাজ করেছি তখনও অপপ্রচার ছিল। অপপ্রচার রুখে দেবার শক্তি হচ্ছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। এটার উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। মানুষ যদি সচেতন হয় যে যেদিক থেকে বাধা নিয়ে আসুক না কেন তা অতিক্রম করা সম্ভব।
রবিবার দুপুরে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জাতীয় পর্যালোচনা সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। পর্যালোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, আমরা এখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সিটি কর্পোরেশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, কওমি মাদরাসার প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষক সমাজসহ বিভিন্ন স্তরের অংশীদারদের সঙ্গে সভা করেছি, যাতে সকলের অংশগ্রহণে এইচপিভি টিকা কার্যক্রমটা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারি।
তিনি বলেন, এইচপিভি টিকা কার্যক্রমে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যে পঁচিশ লক্ষ টিকা দেওয়া হয়েছে। আশা করি, সকলের সহযোগিতায় বাকি সময়ের মধ্যে আমরা ৯০ শতাংশ টিকা দেওয়া সম্পূর্ণ করতে পারব।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে দেশের প্রত্যেকটা হাসপাতাল, ক্লিনিক, বিশেষভাবে ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নার্সদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। প্রত্যেকটা হাসপাতালে ডেঙ্গু বিষয়ে ফোকাল কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে এবং আলাদা ইউনিট গঠন করা হয়েছে। তুলনা করলে দেখা যাবে, গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেক কম। তাই বলে থেমে নেই। আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে ডেঙ্গু সংক্রমণ এবং মৃত্যু আরো কমানো যায়। এটা শুধু সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা ছাত্র জনতা প্রত্যেকেই যদি ডেঙ্গু প্রতিরোধে এগিয়ে আসি এবং মশার উপদ্রব হওয়ার স্থানগুলো পরিষ্কার রাখি, তাহলে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এজন্য সকলের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা ছাত্র জনতাসহ প্রত্যেকই যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসি, তাহলে ডায়রিয়া, কলেরার মতো ডেঙ্গুর প্রকোপও এক সময় কমে যাবে।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অফিসার ডা. চিরঞ্জিত দাস, ইউনিসেফের চিফ এসবিসি সেকশন প্রতিনিধি মিস ব্রিজেত জব জনসন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) অং সুই প্রু মারমাসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল বিভাগ ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ; চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও কওমি মাদ্রাসার সম্মানিত প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল