ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে এখনও চলছে উত্তেজনা, ক্ষোভ, বিক্ষোভ, শাটন ট্রেন বন্ধ ও অবরোধ কর্মসূচিও। এতে দিয়াজ হত্যার সুষ্টু তদন্তসহ ৫ দফা দাবিতে রবিবার সকাল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আন্দোলনে নামে চবি ছাত্রলীগের একাংশ।
আন্দোলনকারী ছাত্রদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে দিয়াজ ইরফান চৌধূরী হত্যার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আদালতের নির্দেশে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ, তদন্তের স্বার্থে প্রক্টরিয়াল বডি থেকে সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেনকে অপসারণ, সকল আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার, পূর্বের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বাতিল করে স্বচ্ছতার সঙ্গে নতুন ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেশ এবং শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ রক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এ ঘটনা ও দাবির প্রেক্ষিতে দিয়াজের পরিবারের করা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে সুষ্টু তদন্তের স্বার্থে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।
তবে দিয়াজ হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একপক্ষের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার সকালে দিয়াজ ইরফান হত্যার অন্যতম আসামী সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে তার দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেন আন্দোলনকারীরা। সহকারী প্রক্টর আনোয়ারকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা পাঁচ দাবির অন্যতম দাবি ছিল বলে জানান আন্দোলনকারী পক্ষের নেতা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি শোভন শুভ।
অভিযোগ রয়েছে, দিয়াজ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এবং সিআরবির ডাবল মাডার্র মামলারও আসামি চবি ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু ও সহকারি প্রক্টরকে এ ঘটনা থেকে বাচানোর জন্য কৌশলে একটি গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দিয়াজ হত্যার ঘটনাটিও ভিন্নভাবে প্রভাবিত করতেও চেষ্টা চালাচ্ছেন সেই চক্রটি।
প্রসঙ্গতঃ গত ২০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর ফটক এলাকার নিজ বাসায় ঝুলন্ত অবস্থায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মরদেহ পাওয়া যায়। ঘটনার দুদিন পর ২৩ নভেম্বর তৈরি করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয় আত্মহত্যার ফলে শ্বাসরোধ হয়ে দিয়াজের মৃত্যুু হয়েছে। কিন্তু পরিবার এ প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে দাবি করে আসছিল দিয়াজকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে তার মরদেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদি হয়ে চট্টগ্রামের আদালতে ১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আসামিদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুসহ উল্লেখযোগ্য অনেকের নামও রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৮ নভেম্বর ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন