যুক্তরাষ্ট্রে সরকারী কার্যক্রমে অচলাবস্থা চলছে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিলাসবহুল নতুন বলরুম নির্মাণ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে হোয়াইট হাউসেই এই বিশাল বলরুম নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন ট্রাম্প, যেখানে নাকি অনুষ্ঠিত হবে উচ্চবিত্ত অতিথিদের জন্য জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান।
বলরুম নির্মাণের অর্থ আসছে ধনী দাতা, বড় বড় কর্পোরেশন এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী মহল থেকে। গত ১৫ অক্টোবর হোয়াইট হাউসে এক নৈশভোজে আমাজন, অ্যাপল, গুগল, মেটা, টি-মোবাইলসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই নির্মাণ প্রকল্পের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হয়। সেদিন অতিথিদের পরিবেশন করা হয় সোনালি সাজসজ্জায় বিলাসবহুল খাবার, যখন বাইরে লাখো মানুষ অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
এদিকে সরকারী অচলাবস্থার কারণে প্রায় ৪ কোটি ২০ লাখ নিম্নআয়ের মানুষ খাদ্য সহায়তা হারানোর আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন। বিভিন্ন ফেডারাল সেবা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সরকারি কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না এবং জরুরি খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি থমকে যাওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।
সমালোচকরা বলছেন, খাদ্য সহায়তা কমিয়ে ধনীদের জন্য বিলাসবহুল বলরুম নির্মাণ, এ যেন রাজকীয় বিলাস আর সাধারণ মানুষের ক্ষুধার নির্মম তুলনা। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, যখন শিশুরা খাবার পাচ্ছে না, তখন প্রেসিডেন্ট ধনীদের জন্য বলরুম বানাচ্ছেন! এটা কীভাবে সম্ভব?
বেশ কয়েক জন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, ট্রাম্প সরকারের এই পদক্ষেপ ব্যক্তিগত স্বার্থে সরকারি ক্ষমতার ব্যবহার; যা যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এমনকি অনেক রিপাবলিকান সমর্থকরাও বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
একটি সাম্প্রতিক মতামত জরিপে দেখা গেছে, দেশটির মাত্র ২৮% মানুষ বলরুম নির্মাণ প্রকল্পকে সমর্থন করছে, আর ৫৬% মানুষ এর বিরোধিতা করছেন। সরকারী অচলাবস্থার দায়ও অনেকেই প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকানদের ওপর দিচ্ছেন।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল